প্রতিদান (পরের কল্যাণে স্বার্থ পরিত্যাগ)
আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা (যিনি) আমি বাঁধি তার ঘর, (ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে পরার্থপরতা)
(ক্ষমাশীলতা) আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর। (প্রতিহিংসার বদলে পরম মমতা)
যে মোরে করিল পথের বিবাগি- (উদাসীন/ সংসারত্যাগী) (ভালোবাসাপূর্ণ পৃথিবীর প্রত্যাশা)
পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি, (ভালোবাসা দিয়ে অনিষ্টকারীকে ঘরে ফেরানো)
(মহত্ত্ব) দীঘল রজনী তার তরে জাগি ঘুম যে হরেছে (কেড়েছে) মোর; (শত্রুর প্রতি মহানুভবতা)
আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তার ঘর।
আমার এ কূল ভাঙিয়াছে যেবা আমি তার কূল বাঁধি, (কল্যাণময় পৃথিবী বিনির্মাণ)
যে গেছে বুকেতে আঘাত হানিয়া তার লাগি আমি কাঁদি।
যে মোরে দিয়েছে বিষে-ভরা বাণ, (কটুকথা)
আমি দেই তারে বুকভরা গান, (প্রীতিপূর্ণ আচরণ দিয়ে ব্যক্তির ভুল ভাঙতে আগ্রহী)
কাঁটা পেয়ে তারে ফুল করি দান সারাটি জনম-ভর, (অনিষ্টকারীর কল্যাণ কামনা)
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
মোর বুকে যেবা কবর বেঁধেছে (ব্যাথা দেওয়া) আমি তার বুক ভরি (যে কবিকে নিঃস্ব করেছে, কবি তাকে ভালোবাসায় পরিপূর্ণ করতে চান)
রঙিন ফুলের সোহাগ-জড়ানো ফুল মালঞ্চ (ফুলের বাগান) ধরি।
যে মুখে কহে সে নিঠুরিয়া বাণী,
আমি লয়ে করে তারি মুখখানি,
কত ঠাঁই (আশ্রয়) হতে কত কী যে আনি সাজাই নিরন্তর- (অবিরাম) (কেউ নিষ্ঠুর আচরণ করলে কবি ভালোবাসায় তার মুখ সাজিয়ে দিতে চান)
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর। (বাসযোগ্য সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে)
- প্রতিদান কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত। এটি বালুচর কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে।
- আরও পড়ুন- সোনার তরী কবিতার বিশ্লেষণ