বাংলার ক্ষমতাশীল হুসাইন শাহী বংশের শাসন
- বঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে হাবশি শাসনামল একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। হাবশি শাসন উৎখাত করে আলাউদ্দিন হুসাইন শাহ গৌড়ের সিংহাসনে বসলে হুসাইন শাহী বংশের শাসনের সূচনা ঘটে। এই সময় দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সামরিক ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জিত হয়। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিশিষ্ট রূপ পরিগ্রহ করেছিল। ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ফলে বাংলায় নবজাগরণের সূচনা হয় এবং হাবশিদের পরিবর্তে স্থানীয়দের নিয়োগ দেওয়া হয়। ফলে হিন্দুরা শাসনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পদ লাভ করে। বঙ্গে ব্যাপকভাবে বৈষ্ণবধর্ম প্রচারিত হয়। এই বংশের শাসনকালকে বাংলার স্বর্ণযুগ বলা হয়। বাঙালি জাতির এ সময়ের নবজাগরণের সাথে ইউরোপীয় রেনেসাঁর সাথে তুলনা করা হয়। এটিই বাংলার শেষ স্বাধীন সুলতানি বংশ। এরপর আফগানরা বাংলা শাসন করে।
আলাউদ্দিন হোসেন শাহ- বাংলার প্রভাবশালী শাসক
- আলাউদ্দিন হুসাইন শাহ : বঙ্গের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় সুলতান। তাঁর রাজ্যের আয়তন পূর্ববর্তী সুলতানদের তুলনায় অনেক বেশি বিস্তৃত ছিল। তাঁর রাজত্বকালের যত ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন আছে তেমন আর কোনো বঙ্গের সুলতানের নেই। তিনি কঠোর হস্তে রাজ্য শাসন করেন। সর্বপ্রথম তিনি হাবশি আমির ও সেনাদের বাংলা থেকে বিতাড়ন করেন এবং স্থানীয় আমির ও সেনাদের নিজ নিজ পদে পুনর্বহাল করেন। বাংলার প্রশাসনে সৈয়দ, আফগান ও মোগলদের প্রাধান্য দেন। রাজধানী গৌড় থেকে একডালাতে স্থানান্তর করেন।
- দিল্লির সাথে সংঘর্ষ : সিংহাসনে আরোহণ করার পর দিল্লির সুলতান সিকান্দার লোদীর সাথে তাঁর সংঘর্ষ হয়। ১৪৯৪ সালে হোসেন শাহ শার্কি সিকান্দার লোদির কাছে পরাজিত হয়ে বাংলায় পালিয়ে যান। আলাউদ্দিন হোসেন শাহ তাকে আশ্রয় প্রদান করেন। ফলে সুলতান সিকান্দার লোদি ১৪৯৫ সালে বাংলার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন। যদিও তাঁর আক্রমণ ব্যর্থ হয় এবং উভয়পক্ষের চুক্তির মাধ্যমে এর সমাধা হয়।
- রাজ্য বিস্তার : ১৪৯৯ থেকে ১৫০২ সাল পর্যন্ত তিনি কামরূপ ও কামতা রাজ্য আক্রমণ করে পুত্র দানিয়েলকে সেখানকার শাসক বানান। এরপর উড়িষ্যা, ত্রিপুরা, আসাম ও আরাকানে তিনি তাঁর কর্তৃত্ব সুসংহত করেন। আসামের অহোম রাজ্য জয়ের জন্য অভিযান পরিচালনা করলেও তা ব্যর্থ হয়। তাঁর সেনাপতি পরাগল খান আরাকান রাজকে পরাজিত করে চট্টগ্রাম দখল করেন। এভাবে তিনি বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যাব্যাপী এক বিশাল রাজ্য স্থাপন করেন। হোসেন শাহের রাজত্বের শেষের দিকে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য একটি পর্তুগিজ দল বাংলায় আসে।হুসেন শাহের রাজ্য কয়েকটি প্রদেশে বিভক্ত ছিল এবং এর দায়িত্ব ছিল গভর্নরের উপর। সুলতান সরাসরি প্রাদেশিক গভর্নর নিযুক্ত করতেন। একটি প্রদেশ আবার কয়েকটি জেলা বা শহরে বিভক্ত হত এবং একজন শাসককে সামরিক দায়িত্ব দেওয়া হত। মহলের প্রধান কর্মকর্তাকে বলা হত শিকদার অথবা ‘জঙ্গদার’।
-
বাংলা সাহিত্যে অবদান-
- বাংলা সাহিত্যে অবদান : তাঁর আমলে বাংলায় মুসলিম সভ্যতার অভূতপূর্ব উন্নতি হয়। তিনি জনদরদি ও প্রজাহিতৈষি রাজা ছিলেন। হিন্দুদের গুরুত্বপর্ণে নিয়োগ দেন। কবি মুকুন্দ দাস ছিলেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক। তাঁর উদারতায় মুগ্ধ হয়ে হিন্দু প্রজারা তাঁতে ‘নৃপতি তিলক, জগৎভূষণ, কৃষ্ণাবতার’ উপাধি দেয়। এই সময় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের নতুন যুগের সূচনা ঘটে। ‘রামায়ণ’ ‘ভগবদ গীতা’ বাংলা অনূদিত হয়। পরাগল খানের পৃষ্ঠপোষকতায় কবীন্দ্র পরমেশ্বর ‘মহাভারত’ অনুবাদ করেন। হুসেন শাহ স্থাপত্যশিল্পের একজন শ্রেষ্ঠ নির্মাতা ছিলেন। গৌড়ের বিখ্যাত ছোট সোনা মসজিদ, মানিকগঞ্জের নাচাইল মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেন। এই সময় বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক শ্রীচৈতন্যদেবের অভ্যুদয় হয়। হিন্দু-মুসলমানের মিলনের যোগসূত্র হিসেবে তিনি ‘সত্যপীর’ নামে নতুন একটি সংস্কৃতি প্রবর্তন করেন। ১৫১৯ সালে তিনি মারা যান।
- নসরত শাহ : আলাউদ্দিন হোসেন শাহের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র নসরত শাহ ক্ষমতায় আসেন। হুসাইন শাহের ১৮ জন পুত্রের মধ্যে নসরত শাহ বড় ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর তিনি অন্যান্য রাজার মতো ভাইদের বন্দী করেননি কিংবা কোনো নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেননি।
-
মুঘলদের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ-
- মুগলদের সাথে সংঘর্ষ : ১৫২৬ সালে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদি বাবরের নিকট পরাজিত হন। দিল্লীতে মুগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হলে বিদ্রোহী আফগান শাসকরা নসরত শাহের রাজ্যে আশ্রয় নেয়। সিকান্দার লোদির ভাই মাহমুদ লোদিও বাংলায় আশ্রয় নেন। এতে বাবরের সাথে নসরত শাহের সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে পড়ে।
প্রথম পর্যায়ে বাবর দূত পাঠায় এবং নসরত শাহ বাবরের নিকট উপঢৌকন পাঠিয়ে মিত্রতা স্থাপনের চেষ্টা করে। বাবর সন্ধির জন্য শর্তের প্রস্তাব দিলে নসরত শাহ সরাসরি জবাব না দিয়ে দূতকে কৌশলে বছরখানেক নিজের কাছে আটকে রাখে এবং বাবরের গতিবিধির উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হয়নি। ১৫২৯ সালে বাবর নসরত শাহকে ঘঘরার যুদ্ধে পরাজিত করেন। নসরত শাহ সন্ধি করতে বাধ্য হয়। বাবরের মৃত্যুর পর নসরত পুনরায় মুগল বিরোধী সংঘ গড়ে তোলেন।
পরবর্তীতে হুমায়ুন বাংলাদেশে অভিযানের পরিকল্পনা করেন। এ সংবাদ পেয়ে নসরত শাহ গুজরাটের সুলতান বাহাদুর শাহের দরবারে দূত পাঠিয়ে সম্পর্ক স্থাপন করেন। ত্রিপুরার রাজা দেবমাণিক্য চট্টগ্রাম দখল করলে নসরত শাহের সাথে তার সংঘর্ষ বাঁধে। বলাবাহুল্য, বাংলার সুলতানের সাথে আরাকান ও ত্রিপুরার রাজার প্রায়ই যুদ্ধ চলত। ১৫৩২ সালে নসরত শাহ আসাম দখল করেন।
তাঁর শাসনামলে দুটি পর্তুগিজ প্রতিনিধিদল দরবারে আসেন। তারা বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও চট্টগ্রামের দুর্গ নির্মাণের চেষ্টা করে। কিন্তু নসরত শাহ কঠোর হস্তে তা দমন করেন। তবে প্রতিনিধিদলের সদস্য গনসেলো টেভারেজ শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা লাভে সমর্থ হন। নসরত শাহের রাজত্বকালেই হোসেন শাহী শাসনের পতনের প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং গিয়াসউদ্দীন মাহমুদ শাহের রাজত্বকালে তা চরমে পৌঁছে।বাংলার ইতিহাসে নসরত এক মহান সুলতান ছিলেন। প্রজাদের কষ্ট দূর করার তিনি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে কূপ-পুকুর খনন করেন। বাগেরহাটের মিঠাপুকুর নির্মাণের অনন্য কৃতিত্ব তাঁর। তিনি শিল্প ও স্থাপত্যবিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। গৌড়ের বিখ্যাত কদমরসুল মসজিদ, বড় সোনা মসজিদ ছাড়াও বহু মসজিদ মাদ্রাসা তিনি নির্মাণ করেন। তাঁর আমলে কবি শ্রীকর নন্দী মহাভারতের বাংলা অনুবাদ করেন। নসরত শাহ ১৩ বছর দক্ষতার সাথে রাজত্ব পরিচালনা করেছিলেন। বঙ্গদেশ, ত্রিহুত, বিহার এবং উত্তর প্রদেশের কিয়ংদশ নিয়ে তাঁর রাজ্য গঠিত ছিল। ১৫৩২ সালে তিনি জনৈক প্রাসাদরক্ষী কর্তৃক নিহত হন।
- আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহ : নসরত শাহের ছেলে আলাউদ্দিন বাংলার ক্ষমতায় বসেন। তিনি প্রায় এক বছর ক্ষমতায় ছিলেন। অহোম রাজ্যের সাথে বাংলার সংঘর্ষ তখনও চলমান থাকে। তিনি চাচা গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ কর্তৃক নিহত হন।
- গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহ : বাংলার হোসেন শাহী বংশের শেষ সুলতান। তিনি তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র সুলতান আলাউদ্দীন ফিরুজকে হত্যা করে ১৫৩৩ সালে সিংহাসনে বসেন এবং পাঁচ বছর শাসন করেন।
সিংহাসনে আরোহণের পর তিনি খুব জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। দক্ষিণ-পূর্বে গভর্নর খুদা বখশ খান প্রায় স্বাধীন শাসকের মতো আচরণ করতে থাকেন। অন্যদিকে রাজ্যের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের রাজনৈতিক শক্তিসমূহ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছিল। আলাউদ্দীন ফিরুজকে হত্যার অজুহাতে হাজীপুরের শাসক মখদুম আলম তাঁকে সুলতান মানতে অস্বীকার করেন এবং বিহারের শাসক শেরখানের সাথে মিত্রতা স্থাপন করেন। এ সময় জালাল খান লোহানীর অভিভাবক হিসেবে শেরখানই ছিলেন বিহারের প্রকৃত শাসক। - শেরখানের সাথে সংঘর্ষ : মাহমুদ শাহ মখদুম আলমকে দমন করতে সক্ষম হলেও শেরখানের শক্তি বৃদ্ধি পায়। শেরখানের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিহারে দুটি দলের সৃষ্টি করে। একটি শেরখানের ও অপরটি জালাল খানের নেতৃত্বে। জালাল খান শেরখানের বিরুদ্ধে মাহমুদের নিকট সাহায্য চান এবং বাংলার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার ছলে তিনি তার সমর্থকদের নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করেন। নিজেকে মাহমুদের আশ্রয়ে সমর্পণ করে বিহারে অভিযানে অনুরোধ জানান।
মাহমুদ শাহ বিহার জয় করার জন্য ১৫৩৪ সালে ইব্রাহিম খানের নেতৃত্বে একটি বাহিনী পাঠান। এ অভিযানে জালাল খানও ইব্রাহিম খানের সাথে ছিলেন। শেরখান অতর্কিতে সম্মিলিত বাহিনীকে সুরজগড়ে আক্রমণ করে পরাজিত করেন। যুদ্ধে ইব্রাহিম খান নিহত হয় এবং জালাল খান মাহমুদ শাহের নিকট ফিরে যান। সুরজগড়ের যুদ্ধ বাংলার সামরিক মর্যাদাকে বিনষ্ট করে। এরপর লোহানীরা দৃশ্যপট থেকে বিদায় নেয়। মাহমুদ শাহ ও শেরখান উভয়ই শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে স্থিরপ্রতীজ্ঞ হন। -
পর্তুগিজদের কে সেনাবাহিনীতে যোগদানের সুযোগ দেয়?
- পর্তুগিজদের নিয়োগ : ইতোমধ্যে বাংলার উপকূলে পর্তুগিজদের আগমন এবং তাদের কর্মকাণ্ড মাহমুদকে আরও সমস্যার মধ্যে ফেলে দেয়। পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে বাণিজ্য করতে এসে ব্যবসায়ীদের সাথে খারাপ আচরণ করে। মাহমুদ শাহের নির্দেশে তাদেরকে বন্দি করে গৌড়ে পাঠানো হয়। কিন্তু শেরখানের আক্রমণাত্মক কর্মতৎপরতায় মাহমুদ তার কর্মপন্থা পরিবর্তন করতে বাধ্য হন। শেরখানের সাথে মোকাবিলা করার জন্য তিনি পর্তুগিজদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। তিনি পর্তুগিজ বন্দিদের মুক্তি দেন এবং ডি. মেলো জুসার্তেকে তার সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন। পর্তুগিজদের চট্টগ্রাম ও সাতগাঁয়ে (হুগলি) কারখানা নির্মাণেরও অনুমতি দেওয়া হয়।গুজরাটে হুমায়ুনের ব্যস্ততার সুযোগে শেরখান ১৫৩৫ সালে ভাগলপুর দখল করে তেলিয়াগড়ে উপস্থিত হন। এ সময়ে পর্তুগিজদের সহায়তায় মাহমুদের বাহিনী তেলিয়াগড় গিরিপথ সুরক্ষিত করে রেখেছিল। শেরখান তার গতিপথ পরিবর্তন করে ঝাড়খন্ডের পথে গৌড়ে উপস্থিত হন। এভাবে তিনি মাহমুদের সকল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরিকল্পনাকে নিষ্ফল করে দেন। শেরখানের আকস্মিক উপস্থিতিতে তিনি ভীত হয়ে পড়েন। তার পর্তুগিজ মিত্রগণ তাকে তাদের সাহায্য না পৌঁছা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন। কিন্তু মাহমুদ সে সময় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শান্তি স্থাপনের জন্য শেরখানের নিকট প্রস্তাব দেন। শেরখান তার শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং প্রচুর পরিমাণে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিহারে প্রত্যাবর্তন করেন।১৫৩৭ সালে শেরখান পুনরায় বাংলার রাজধানী অবরোধ করেন। এ সময়ে হুমায়ুন চুনার দখল করার জন্য পূর্বদিকে অগ্রসর হচ্ছিল। ফলে শেরখান তাঁর পুত্র জালাল খান ও খাবাস খানকে গৌড় অবরোধের দায়িত্ব দিয়ে মুগলদেরকে ব্যস্ত রাখার উদ্দেশ্যে তিনি অতি দ্রুত চুনারে চলে যান। মাহমুদ শাহ দুর্গ থেকে বের হয়ে শত্রুদের আক্রমণ করেন। যুদ্ধে তিনি আহত হন এবং পরাজিত হয়ে উত্তর বিহারের হাজীপুরে পালিয়ে যান। এভাবে গৌড় ১৫৩৮ সালের এপ্রিলে আফগানদের নিয়ন্ত্রণাধীনে চলে যায়।
হুমায়ুন এই সময় চুনার দখল করার জন্য বারকুন্ডায় অবস্থান করছিলেন। উত্তর বিহার থেকে মাহমুদ হুমায়ুনকে বাংলার আফগানদের বিতাড়িত করার অনুরোধ জানান। হুমায়ুন তাতে সাড়া দিয়ে বাংলা অভিমুখে অভিযান পরিচালনা করেন। মাহমুদ শাহ দরবেশপুরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন। খলগাঁওয়ে তাদের উপস্থিতির পর মাহমুদ জানতে পারেন যে, আফগানদের হাতে গৌড়ের পতন ও তার দুই পুত্র নিহত হয়েছে। এ সংবাদের শোকে তাঁর মৃত্যু হয়। এভাবে ১৫৩৮ সালে হোসেন শাহী বংশের অবসান হয় এবং বাংলার স্বাধীন সালতানাতেরও অবসান ঘটে।
- পূর্বের আলোচনা পড়ুন : রাজা গণেশ ও হাবশি শাসন
- পরবর্তী আলোচনা : বাংলা শূর বংশের শাসন