ভারতবর্ষে গুপ্ত বংশের শাসন ও সম্রাট শশাঙ্কের ইতিহাস- Gupta Empire in India

ভারতবর্ষে গুপ্ত শাসনের পটভূমি

  • মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের উপর উত্তর ভারতে কুষাণরা ও দাক্ষিণাত্যে সাতবাহন রাজারা কিছুটা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু তৃতীয় শতাব্দীতে উভয় সাম্রাজ্যের পতন হয়। গুপ্ত সাম্রাজ্যের অভ্যুত্থানের ফলে এই রাজনৈতিক শূন্যতার অবসান হয়। কুষাণ ও সাতবাহন সাম্রাজ্যের বেশ কিছু অংশ গুপ্ত সাম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত হলেও আয়তনের দিক থেকে গুপ্ত সাম্রাজ্য মৌর্য সাম্রাজ্যের তুলনায় ছোট ছিল। গুপ্ত সাম্রাজ্য প্রধানত বিহার ও উত্তর প্রদেশেই সীমাবদ্ধ ছিল। গুপ্ত রাজারা সম্ভবত কুষাণ রাজাদের সামন্ত হিসেবে উত্তর প্রদেশ ও মগধে শাসন করতেন।
  • ভূ-ভাগ অনুসারে প্রাচীন ভারত-

  • ভারতকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
    ১. আর্যাবর্ত বা উত্তরাপথ : উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা থেকে শুরু করে দক্ষিণে নর্মদা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলকে আর্যাবর্ত বলা হয়। এটি তিনভাগে বিভক্ত। যথা-
    ক. উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল : হিমালয়ের নিকটবর্তী কাশ্মীর, কাংড়া, সিকিম, ভুটান প্রভৃতি স্থান নিয়ে এই অঞ্চল গঠিত।
    খ. সিন্ধু-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা : হিমালয় পর্বতমালার পাদদেশের দক্ষিণ অংশ থেকে মধ্যভারতের মালভূমি অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত অংশকে সিন্ধু-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা বলা হয়। দীর্ঘকাল থেকে এই স্থান উর্বর ও কৃষিকাজের সহায়ক। প্রাচীন আর্য সভ্যতার বিকাশ এই অঞ্চলেই ঘটেছিল।
    গ. মধ্যভারতের পার্বত্য মালভূমি : এই অঞ্চলটি গাঙ্গেয় উপত্যকা ও বিন্ধ্য পর্বতের মাঝে অবস্থিত। একসময় আর্যদের ক্রমাগত বিস্তারের ফলে আর্যবর্তের আদিম অধিবাসীরা এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন শুরু করে।

    ২. দাক্ষিণাত্য : দাক্ষিণাত্যকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
    ক. দক্ষিণ ভারতের মালভূমি : উত্তরে বিন্ধ্য পর্বত ও দক্ষিণে কৃষ্ণা-তুঙ্গভদ্রা নদীর মাঝে এই মালভূমি অবস্থিত। কাবেরি, কৃষ্ণা, পোদাবরি নদীর কারণে এই অঞ্চলের সমৃদ্ধি পেয়েছে।
    খ. সুদূর দক্ষিণের উপদ্বীপ অঞ্চল : কৃষ্ণা ও তুঙ্গভদ্রা নদীর দক্ষিণ থেকে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত এই অঞ্চল বিস্তৃত।

 

Gupta dynasty
 Gupta dynasty
  • শ্রীগুপ্ত : গুপ্ত বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শ্রীগুপ্ত। তিনি ‘মহারাজ’ উপাধি ধারণ করেন এবং সম্ভবত মগধের কোনো অংশের ক্ষুদ্র রাজ্যের শাসক ছিলেন।
  • প্রথম চন্দ্রগুপ্ত :  প্রাচীন ভারতে গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ও প্রকৃতি প্রতিষ্ঠাতা প্রথম চন্দ্রগুপ্ত। তাঁর সময় থেকেই প্রকৃতপক্ষে গুপ্ত বংশের বিস্তার ঘটে। তিনি লিচ্ছাবিয়া রাজবংশে বিয়ে করেন যা গুপ্ত বংশের মর্যাদা বৃদ্ধি করে। তাঁর রাজ্য উত্তর প্রদেশের পূর্বাংশ, বিহার এমনকি বাংলা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তাঁর সিংহাসনে আরোহণের সময় থেকে ‘গুপ্তাব্দ’ প্রচলিত হয়। তাঁর মৃত্যুর পর পুত্র সমুদ্রগুপ্ত ক্ষমতায় আসেন।
  • গুপ্ত রাজাদের অবদান
    গুপ্ত রাজাদের অবদান
  • সমুদ্রগুপ্ত : প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে রাজ্যবিজেতা রূপে যে সকল সম্রাট খ্যাতি লাভ করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম সমুদগুপ্ত। গাঙ্গেয় উপত্যকার একটি রাজ্যকে তিনি সর্বভারতীয় সাম্রাজ্যে পরিণত করেন। তিনি আর্যাবর্তের প্রায় সকল রাজ্যই গুপ্ত সাম্রাজ্যভুক্ত করে ‘সর্বরাজোচ্ছেত্তা’ উপাধি গ্রহণ করেন। সমুদ্রগুপ্তের রাজত্বকালেই বাংলার অধিকাংশ অঞ্চল গুপ্তবংশের শাসনে আসে। তাঁর সাম্রাজ্য উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে নর্মদা নদীর তীর পর্যন্ত এবং পূর্বে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে পশ্চিমে চম্বল ও যমুনা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ড. স্মিথ তাকে ‘প্রাচীন ভারতের নেপোলিয়ন’ বলেছেন।
  • দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত : সমুদ্রগুপ্তের মৃত্যুর পর তাঁর মনোনয়ন অনুসারে পুত্র দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত মগধের সিংহাসনে বসেন। তিনি বিক্রমাদিত্য, নরেন্দ্রচন্দ্র, সিংহচন্দ্র, দেবরাজ, দেবশ্রী, দেবগুপ্ত ইত্যাদি নামে পরিচিত। তিনি শকদের ধ্বংস করে ‘শকারী’ উপাধি ধারণ করেন। এ সময় গুপ্ত শাসন আরব সাগরের তীর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এর ফলে পাশ্চাত্য দেশগুলোর সাথে ভারতের বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়।
    দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত প্রথমে পাটালিপুত্র ও পরে উজ্জয়িনীতে সাম্রাজ্যের রাজধানী স্থাপন করেন। কালক্রমে উজ্জয়িনী ভারতের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পরিণত হয়। তাঁর আমলেই গুপ্ত সাম্রাজ্য উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে।  সমুদ্রগুপ্তকে গুপ্ত সাম্রাজ্যের বিস্তারকর্তা বলা হলে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তকে এই সাম্রাজ্যের সংগঠক বলা চলে। মহাকবি কালিদাস তাঁর সমকালীন ছিলেন। নবরত্নের বেশ কয়েকজন দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের সভা অলংকৃত করেছেন। তাঁর আমলে চীনা পর্যটক ফা-হিয়েন ভারতে আসেন। ফা হিয়েনের প্রকৃত নাম কুঙ্গ। বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাঁর নাম রাখা হয় ফা-হিয়েন। দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের মৃত্যুর পর কুমারগুপ্ত ও স্কন্ধগুপ্ত গুপ্ত সাম্রাজ্যের হাল ধরেন। অনেক ঐতিহাসিক গুপ্ত শাসনকে ‘প্রজাহিতৈষি স্বৈরতন্ত্র’ বলেছেন।
  • কুমারগুপ্ত : দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের পর কুমারগুপ্ত মগধের সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি নতুন কোনো রাজ্য জয় না করলেও গুপ্ত সাম্রাজ্যের সীমানা অক্ষুণ্ন রাখেন। এই সময়ে উত্তর-পশ্চিম ভারতে হুন আক্রমণ হয়। যুবরাজ স্কন্দগুপ্ত হুনদের পরাজিত করে আসন্ন বিপদ থেকে ভারতকে রক্ষা করেন। ধারণা করা হয় তিনি নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
  • স্কন্দগুপ্ত : হুনদের আক্রমণ থেকে ভারতকে রক্ষা করায় তাঁকে ‘ভারতের রক্ষাকারী’ বলা হয়। তাঁর মৃত্যুর পর গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন তরান্বিত হয়। সামন্তরাজরা বিদ্রোহ শুরু করে।
  • প্রশাসনিক পরিভাষা : ভুক্তি (প্রদেশ), বিষয় (জেলা)। ভুক্তিগুলো বিষয়, মণ্ডল, বীথি ও গ্রামে বিভক্ত ছিল। সবগুলোরই কেন্দ্র ছিল যার নাম অধিকরণ (অফিস)।

  • ফা হিয়েনের প্রকৃত নাম ঝবযর. বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাঁর নাম রাখা হয় ফা-হিয়েন।
    গুপ্ত যুগকে প্রাচীন ভারতীয় স্বর্ণযুগ বলা হয়। এ যুগে সাহিত্য-বিজ্ঞান-শিল্পের বেশ উন্নতি হয়।
    (ইংরেজি সাহিত্যের স্বর্ণযুগ বলা হয় Elizabethan period)

    European Hun Empire
    European Hun Empire


    হুন জাতির ইতিহাস

  • হুনরা ইতিহাসে আলোচিত যাযাবর জাতি। কাস্পিয়ান সাগরের তীরবর্তী অঞ্চল থেকে উঠে এসে ৪র্থ ও ৫ম শতাব্দীতে এরা ইউরোপের উল্লেখযোগ্য অংশ এবং রোমান সাম্রাজ্যে নিজেদের রাজত্ব কায়েম করে।
    ৩৭০ সালের দিকে হুনদের ইউরোপ আগমন এক ঐতিহাসিক মোড় নেয়। সে বছর তারা ভলগা নদী অতিক্রম করে ইউরোপে প্রবেশ করে  অ্যালান্স জাতিকে পরাজিত করে ঐ এলাকা দখল করে। ৪৩০ সালের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা হুনরা এক এক করে ইউরোপের এই অঞ্চলে জড়ো হতে থাকে। এভাবে কয়েক দশক ইউরোপ শাসনের পর ৪৫৯ সালে হুন সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।
  • ভারতবর্ষে হুনদের আক্রমণ : হুনদের একটি শাখা রোমান সাম্রাজ্য এবং অন্য একটি শাখা পারস্য অধিকার করে। শেষোক্ত শাখাটি ৫ম শতাব্দীতে গান্ধার রাজ্য জয় করার পর ভারত আক্রমণ করে। এরা শ্বেত হুন নামে পরিচিত। গুপ্তসম্রাট স্কন্দগুপ্তের রাজত্বকালে হুনরা ভারতে আগ্রাসন চালিয়ে সফল হয় নি। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর হুন শক্তির আক্রমণে বিশাল গুপ্ত সাম্রাজ্য বিধ্বস্ত হয়ে যায় এবং হুনদের প্রাধান্য চতুর্দিকে বিস্তার লাভ করে। তোরমান ছিলেন হুন আক্রমণকারিদের প্রথম সুপরিচিত নেতা। হুনরা কেন্দ্রীয়ভাবে ভারত শাসন না করলেও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভারতবর্ষের কিছু অঞ্চল শাসন করে। পরবর্তীতে উত্তর পশ্চিমে বৈবাহিক সূত্রে হুনদের বংশধর রূপে রাজপুত জাতির জন্ম হয়।
  • ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রথম দিকেই গুপ্ত সাম্রাজ্যের দুরবস্থার সৃষ্টি হয়। এই সময় যশোধর্মণ নাম জনৈক রাজা অনেক অঞ্চল জয় করে। দুটো স্বাধীন রাজ্যের উদ্ভব ঘটে। যথা- বঙ্গরাজ্য (দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা ও পশ্চিম বাংলার দক্ষিণাঞ্চল) এবং গৌড়রাজ্য (পশ্চিম ও উত্তর বাংলা)। ৬ষ্ঠ শতাব্দীর প্রথমাংশে বঙ্গ ও শেষভাগে গৌড় স্বাধীন হয়।                                                        
  • সম্রাট শশাঙ্কের উত্থান 

  • শশাঙ্ক : গুপ্ত শাসনামলে বিশাল বিশাল অঞ্চল মহাসামন্ত রাজাদের দ্বারা পরিচালিত হত। শশাঙ্ক মহাসেনগুপ্তের অধীনে গৌড়ের মহাসামন্ত ছিল। ৬০৬ সালে শশাঙ্ক একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে যার রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। গুপ্ত সাম্রাজ্যের দুর্বলতার সুগোগে শশাঙ্ক গৌড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। এ সময় অনেক আঞ্চলিক শক্তির সাথে শশাঙ্কের লড়াই হয়েছিল। যেমন- দেবগুপ্ত, গ্রহবর্মণ, রাজ্যবর্ধন, হর্ষবর্ধন প্রমুখ।

    শশাঙ্কের শাসন
    শশাঙ্কের শাসন
  • শশাঙ্কের সাথে অন্য রাজাদের লড়াই : ৬ষ্ঠ শতাব্দীর শেষের দিকে এবং ৭ম শতাব্দীর শুরুর দিকে এই শক্তিগুলোর মধ্যে আধিপত্যের জন্য তীব্র লড়াই হয়। থানেশ্বরের রাজা প্রভাকরবর্ধনের কন্যা রাজ্যশ্রীর সাথে মৌখরীরাজ গ্রহবর্মণের বিয়ে হলে কনৌজ ও থানেশ্বরের মধ্যে জোট গড়ে ওঠে। এতে শশাঙ্ক শঙ্কিত হন। কনৌজের ঘোর শত্রু মালবরাজ দেবগুপ্তের সাথে মিত্রতা স্থাপন করে পাল্টা জোট গড়ে তোলেন।
    প্রভাকরবর্ধন হঠাৎ মারা গেলে তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র রাজ্যবর্ধন সিংহাসনে বসেন। শশাঙ্ক ও দেবগুপ্ত মিলিতভাবে থানেশ্বের-কনৌজ আক্রমণ করেন। যুদ্ধে গ্রহবর্মণ নিহত হন ও রাজ্যশ্রী বন্দি হন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবর্ধন মালবের দিকে সেনা অভিযান পরিচালনা করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি দেবগুপ্তকে পরাজিত করলেও শশাঙ্কের হাতে নিহত হন বলে ধারণা করা হয়।
    রাজ্যবর্ধনের মৃত্যুর পর হর্ষবর্ধন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ভাস্করবর্মণের সাথে মিত্রতা স্থাপন করে শশাঙ্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। তবে তিনি এক্ষেত্রে সফল হন নি। হর্ষবর্ধন পরবর্তীতে আধুনিক ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের থানেশ্বরে তাঁর রাজধানী নিয়ে উত্তর ভারতের সর্বাধিক শক্তিশালী শাসক হিসেবে পরিচিতি পায়।
    শশাঙ্ক আমৃত্যু স্বাধীন ছিলেন। ৬৩৮ সালে তিনি মারা যান। শশাঙ্কই প্রথম বঙ্গদেশের সর্বত্র নিজের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করেন। বঙ্গদেশের পাঁচটি জনপদের মধ্যে কজঙ্গল, পুণ্ড্রবর্ধন ও তাম্রলিপ্ত, দণ্ডভুক্তি, উৎকল ও গঞ্জাম তাঁর রাজ্যভুক্ত ছিল।
    হর্ষবর্ধন পরবর্তীতে আধুনিক ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের থানেশ^রে তাঁর রাজধানী নিয়ে উত্তর ভারতের সর্বাধিক শক্তিশালী শাসক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল।

  • পূর্বের ইতিহাস পড়ুন : মৌর্য বংশের ইতিহাস
    পরবর্তী আলোচনা : পাল শাসনের ইতিহাস
  • অনুশীলন সিরিজের বাংলাদেশ বিষয়াবলি বইতে তথ্যগুলো আপডেট আকারে পাবেন। অর্ডার করুন-

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart

You cannot copy content of this page

Scroll to Top