এককথায় প্রকাশ বা বাক্য সংকোচন বাংলা ভাষার ঐতিহ্য
মনের ভাব প্রকাশে আমরা বড় বড় বাক্যকে সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ করি। এতে ভাব প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা কমে। কিন্তু এই এককথায় প্রকাশগুলো খুব সহজেই মনে রাখা যায় না। কিছু কৌশল প্রয়োগ করলে সহজেই তা মনে রাখা যায়। সেই কৌশলগুলো নিয়েই বাক্য সংকোচনের এই আয়োজন-
১. কষ্টকর বা সহজ না থাকলে ‘দুঃ’ উপসর্গটি বসে
- যা নিবারণ করা কষ্টকর : দুর্নিবার।
যা দমন করা কষ্টকর : দুর্দমনীয়/ দুর্বার/ দুর্দম।
যা জয় করা কষ্টকর : দুর্জয়।
যেখানে সহজে গমন করা যায় না : দুর্গম।
যা সহজে লঙ্ঘন করা যায় না : দুর্লঙ্ঘ্য।
যা সহজে পার হওয়া যায় না : দুস্তর।
যা কষ্টে লাভ করা যায় : দুর্লভ।
২. ‘যায় না/ না’ থাকলে ‘অ’ উপসর্গটি বসে
- যা নিবারণ করা যায় না : অনিবার্য।
যা দমন করা যায় না : অদম্য।
যা জয় করা যায় না : অজেয়।
যেখানে গমন করা যায় না : অগম্য।
যা লঙ্ঘন করা যায় না : অলঙ্ঘ্য।
যা প্রতিরোধ করা যায় না : অপ্রতিরোধ্য।
তল স্পর্শ করা যায় না যার : অতলস্পর্শ।
যে বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই : অবিসাংবাদী।
অন্য গতি নেই যার : অগত্যা।
যা বর্ণনা করা যায় না : অবর্ণনীয়।
যার দাঁড়ি-গোঁফ উঠেনি : অজাতশ্মশ্রæ।
যার কোনো তিথি নেই : অতিথি।৩. ডাক ও ধ্বনি
- ময়ূরের ডাক : কেকা।
অলংকারের ধ্বনি : শিঞ্জন।
ধাতব পদার্থের পরস্পর আঘাত/ পয়সার সাথে চাবির গোছার আঘাত/ অস্ত্র নাড়াচার শব্দ : ঝনৎকার।
কোকিলের ডাক : কুহু।
সিংহের নাদ : হুংকার।
ধনুকের ধ্বনি : টংকার।
বাদ্যযন্ত্রের ধ্বনি : ঝংকার।
অশ্বের ডাক : হ্রেষা।
হাতির গর্জন : বৃংহিত।
ভ্রমরের শব্দ/ অস্ফুট মৃদু ধ্বনি : গুঞ্জন।
ঢেউয়ের শব্দ : কল্লোল।
শুকনো পাতার শব্দ : মর্মর।
পাখির ডাক : কূজন/ কাকলি।
বীরের গর্জন : হুংকার।
নূপুরের ধ্বনি : নিক্বণ।
মেঘের ধ্বনি : জীমূতমন্দ্র।
গম্ভীর ধ্বনি : মন্দ্র।
ঘর্ষণ বা পুষ্প পেষণজাত সৌরভ : পরিমল।
গদ্যপদ্যময় কাব্য : চম্পু।৪. অক্ষি/ চক্ষু
- অক্ষির অভিমুখে : প্রত্যক্ষ/ সমক্ষ।
অক্ষির অগোচরে : পরোক্ষ।
চক্ষুর সম্মুখে সংঘটিত : চাক্ষুষ।
চোখের কোণ : অপাঙ্গ।
চক্ষুলজ্জা নেই যার : চশমখোর।
পদ্মের ন্যায় অক্ষি যার : পুণ্ডরীকাক্ষ/ পদ্মলোচন।
চোখে দেখা যায় এমন : চক্ষুগোচর।
চোখের নিমেষ না ফেলে : অনিমেষ।৫. স্থায়ী ও স্থিতি
- নষ্ট হওয়া স্বভাব যার : নশ্বর।
যা কখনোই নষ্ট হয় না : অবিনশ্বর।
যা স্থায়ী নয় : অস্থায়ী।
যা চিরস্থায়ী নয়/ নষ্ট হওয়া স্বভাব যার : নশ্বর।
ক্ষণকাল ব্যাপিয়া স্থায়ী : ক্ষণস্থায়ী।
যার বাসস্থান নেই : অনিকেতন।
ঘর নাই যার : হাঘরে।
যে বাস্ত থেকে উৎখাত হয়েছে : উদ্বাস্তু।
যার জ্যোতি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না : ক্ষণপ্রভা।৬. দিন ও রাত্রি
- দিনের পূর্বভাগ : পূর্বাহ্ণ।
দিনের মধ্যভাগ : মধ্যাহ্ন।
দিনের অপর ভাগ : অপরাহ্ণ।
দিবসের শেষ ভাগ : সায়াহ্ন।
রাত্রির প্রথম ভাগ : পূর্বরাত্র।
রাত্রির মধ্য ভাগ : মহানিশা/ নিশীথ।
রাতের শেষভাগ : ভোররাত/ পররাত্র।
রাত্রির তিনভাগ একত্রে : ত্রিযামা।
দিন রাত্রির সন্ধিক্ষণ : গোধূলি।
রাত্রিকালীন যুদ্ধ : সৌপ্তিক।
প্রায় প্রভাত হয়েছে : প্রভাতকল্পা।৭. জয়ন্তী
- জন্মসূচক উৎসব : জয়ন্তী।
২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান : রজত জয়ন্তী।
৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান : রুবি জয়ন্তী।
৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান : সুবর্ণ জয়ন্তী।
৬০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান : হীরক জয়ন্তী।
৬৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান : নীলা জয়ন্তী।
৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান : প্লাটিনাম জয়ন্তী।
১০০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান : শতবার্ষিক।
১৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান : সার্ধশতবর্ষিক।৮. যোগ্য
- চুষে খাওয়ার যোগ্য : চূষ্য।
চিবিয়ে খাওয়ার যোগ্য : চর্ব্য।
চেটে খাওয়ার যোগ্য : লেহ্য।
বহন করার যোগ্য : বাহ্য।
পান করার যোগ্য : পেয়।
বিক্রয় করার যোগ্য : বিক্রেয়।
খাওয়ার যোগ্য : খাদ্য।
পাঠ করার যোগ্য : পাঠ্য।
নিন্দার যোগ্য নয় : অনিন্দ্য।
শোনার যোগ্য : শ্রাব্য।
প্রশংসার যোগ্য : প্রশংসার্হ।
ধন্যবাদের যোগ্য : ধন্যবাদার্হ।
ঘৃণার যোগ্য : ঘৃণ্য/ ঘৃণার্হ।
নৌ চলাচলের যোগ্য : নাব্য।
মান-সম্মান প্রাপ্তির যোগ্য : মাননীয়।
আরাধনা করিবার যোগ্য : আরাধ্য।
বরণ করিবার যোগ্য : বরেণ্য, বরণীয়।
রন্ধনের যোগ্য : পাচ্য।
পা ধোয়ার জল : পাদ্য।
আয়ুর পক্ষে হিতকর : আয়ুষ্য।৯. ইচ্ছা
- লাভ করার ইচ্ছা : লিপ্সা।
নিন্দা করার ইচ্ছা : জুগুপ্সা।
পান করার ইচ্ছা : পিপাসা/ উদন্যা।
জয় করার ইচ্ছা : জিগীষা।
দেখবার ইচ্ছা : দিদৃক্ষা।
সৃষ্টি করার ইচ্ছা : সিসৃক্ষা।
গ্রহণ/ বশীকরণ করার ইচ্ছা : জিঘৃক্ষা।
গমন করার ইচ্ছা : জিগমীষা।
বিজয় লাভের ইচ্ছা : বিজিগীষা।
বাস করার ইচ্ছা : বিবৎসা।
মুক্তিলাভের ইচ্ছা : মুমুক্ষা।
নির্মাণ করার ইচ্ছা : নির্মিৎসা।
হনন করার ইচ্ছা : জিঘাংসা।
বেঁচে থাকার ইচ্ছা : জিজীবিষা।
ভোজন করার ইচ্ছা : বুভুক্ষা।
ক্ষমা করার ইচ্ছা : তিতিক্ষা।
দান করার ইচ্ছা : দিৎসা।
বলার ইচ্ছা : বিবক্ষা।
হরণ করার ইচ্ছা : জিহীর্ষা।
সেবা করার ইচ্ছা : শুশ্রƒষা।
অনুকরণ করার ইচ্ছা : অনুচিকীর্ষা।
অপকার করার ইচ্ছা : অপচিকীর্ষা।
অনুসন্ধান করার ইচ্ছা : অনুসন্ধিৎসা।
প্রতিকার করার ইচ্ছা : প্রতিচিকীর্ষা।
রমণের ইচ্ছা : রিরংসা।
মরণের ইচ্ছা : মুমূর্ষা।১০. নারী
- যে নারী দুগ্ধবতী : পয়স্বিনী।
যে নারী প্রিয় কথা বলে : প্রিয়ংবদা।
যে নারী বীর সন্তান প্রসব করে : বীরপ্রসু।
যে নারী দেহ সৌষ্ঠব সম্পন্না : অঙ্গনা।
যে নারীকে সূর্য স্পর্শ করেনি : অসূর্যস্পশ্যা।
যে নারীর স্বামী বিদেশে থাকে : প্রোষিতভর্তৃকা।
যে নারী অপররের দ্বারা প্রতিপালিত : পরভৃতা।
যে নারী পূর্বে অন্যের বাগদত্তা/ স্ত্রী ছিল : অন্যপূর্বা।
বাগদত্তা বা পুনরায় বিবাহিতা নারী : পুনর্ভূ।
যে নারী শিশুসন্তানসহ বিধবা : বালপুত্রিকা।
যে নারী বার (সমূহ) গামিনী : বারাঙ্গনা/ বেশ্যা।
যে নারী একবার সন্তান প্রসব করেছে : কাকবন্ধ্যা।
যে নারীর সন্তান হয় না : বন্ধ্যা।
যে নারীর স্বামী ও পুত্র জীবিত : বীরা/ পুরন্ধী।
যে নারীর বিয়ে হয় না : অনূঢ়া।
যে নারীর সম্প্রতি বিয়ে হয়েছে : নবোঢ়া।
যে নারীর স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছে : অধিবিন্না।
যে নারীর স্বামী ও পুত্র মৃত : অবীরা।
যে নারী অঘটন ঘটাতে পটিয়সু : অঘটনঘটনপটিয়সী।
যে নারীর হাসি সুন্দর : সুস্মিতা।
যে নারীর হাসি কুটিলতা বর্জিত : শুচিস্মিতা।
যে নারীর সন্তান বাঁচে না/ মৃত সন্তান প্রসব করে : মৃতবৎসা।
যে নারী স্বয়ং পতী বরণ করে : স্বয়ংবরা।
যে নারীর অসূয়া (হিংসা) নেই : অনসূয়া।
যে নারীর বিয়ে হয়নি : কুমারী।
কুমারীর পুত্র : কানীন।
যে নারী সাগরে বিচরণ করে : সাগরিকা।
যে নারী সুন্দরী : রামা।
যে নারী চিত্রে অর্পিতা বা নিবন্ধ : চিত্রার্পিতা।
যে মেয়ের বয়স দশ বছর : কন্যকা।১১. পুরুষ
- যে পুরুষের স্ত্রী বিদেশে থাকে : পোষিতভার্য/ পোষিতপত্নীক।
পত্নীসহ বর্তমান : সপত্নীক।
স্ত্রী বশীভূত যে : স্ত্রৈণ।
পুরুষের কটিবন্ধ : সরাসন।
পুরুষের কর্ণভূষণ : বীরবৌলি।
কাজ শিখছে যে : শিক্ষানবিস।
পুরুষের উদ্যাম নৃত্য : তাণ্ডব।
নারীর লীলাময়ী নৃত্য : লাস্য।
যে প্রথম স্ত্রী জীবিত থাকতে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে : অধিবেত্তা।
যিনি ন্যায় ভালো জানেন : নৈয়ায়িক।
যার উপস্থিত বুদ্ধি আছে : প্রত্যুৎপন্নমতি।
যুদ্ধের সময় বুদ্ধি স্থির রাখেন যিনি : যুধিষ্ঠির।
যুদ্ধ থেকে পালায় না যে বীর : সংশপ্তক।
মায়া (ছল) জানে না যে : অমায়িক।
শক্তির উপাসনা করে যে : শাক্ত।
সর্বত্র বিচরণ করে যিনি : সর্বগ।
যে সুপথ থেকে কুপথে যায় : উন্মার্গগামী।
শোনামাত্র মনে থাকে যার : শ্রুতধর।
ইতিহাস রচনা করেন যিনি : ঐতিহাসিক।
যার দু হাত সমান চলে : সব্যসাচী।
শুভক্ষণে জন্ম যার : ক্ষণজন্মা।
যে পরের গুণেও দোষ ধরে : অসূয়ক।
মান্যব্যক্তি বিদায়কালে কিছুদুর এগিয়ে দেওয়া : অনুব্রজন।
মান্যব্যক্তিকে অভ্যর্থনা জানাতে কিছুদুর এগিয়ে দেওয়া : প্রত্যুৎগমন।১২. পূর্বে
- যা পূর্বে ছিল এখন নেই : ভূতপূর্ব।
যা পূর্বে কখনো হয়নি : অভূতপূর্ব।
যা পূর্বে কখনো আস্বাদিত হয়নি : অনাস্বাদিত।
যা পূর্বে কখনো শোনা যায়নি : অশ্রুতপূর্ব।
যা পূর্বে দেখা যায়নি : অদৃষ্টপূর্ব।
যা পূর্বে কখনো চিন্তা করা হয়নি : অচিন্ত্যপূর্ব।১৩. বলা
- যা বলা হয়েছে : উক্ত।
যা বলা হচ্ছে : বক্ষ্যমাণ।
যা বলা উচিত নয় : অকথ্য।
যা বলা হয় নি : অনুক্ত।
যা বলা হবে : বক্তব্য।১৪. এমন
- প্রকাশিত হইবে এমন : প্রকাশিতব্য।
বুঝতে পারা যায় এমন : বোধগম্য।
দর্শন করা হয়েছে এমন : প্রেক্ষিত।
পাঠ করতে হবে এমন : পঠিতব্য।
স্বাদ গ্রহণ করা হয়েছে এমন : স্বাদিত।
জেগে রয়েছে এমন : জাগরূক।
ভবিষ্যতে ঘটবে এমন : ভবিতব্য।
মাটিতে গড়াগড়ি দিচ্ছে এমন : উপাবৃত্ত।
আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস আছে যার : আস্তিক।
আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস নেই যার : নাস্তিক।১৫. হাত
- হাতের বুড়ো আঙ্গুল : অঙ্গুষ্ঠ।
হাতের দ্বিতীয় আঙ্গুল : তর্জনী।
হাতের তৃতীয় আঙ্গুল : মধ্যমা।
হাতের চতুর্থ আঙ্গুল : অনামিকা।
হাতের পঞ্চম আঙ্গুল : কনিষ্ঠা।
হাতের তালু : করতল।
হাতের কব্জি : মণিবন্ধ।
হাতের কনুই থেকে কব্জি পর্যন্ত অংশ : প্রকোষ্ঠ।
হাতের কব্জি থেকে আঙ্গুলের ডগা পর্যন্ত : পাণি।
১৬. আপন
- আপনকে যে পণ্ডিত মনে করে : পণ্ডিতম্মন্য।
আপনাকে কেন্দ্র করে যার চিন্তা : আত্মকেন্দ্রিক।
আপনার বর্ণ লুকায় যে : বর্ণচোরা।
আপনাকে হত্যা করে যে : আত্মঘাতী।
আত্মার সম্বন্ধীয় বিষয় : আধ্যাত্মিক।
যে আত্ম বিষয়ে সর্বস্ব মনে করে : আত্মসর্বস্ব।১৭. সব
- সব ভক্ষণ করে যে : সর্বভুক।
সব জানেন যিনি : সর্বজ্ঞ।
সব গ্রাস করে যে : সর্বগ্রাসী।
যিনি সর্বত্র ব্যাপিয়া থাকেন : সর্বব্যাপী।১৮. গাছ
- যে গাছে ফল ধরে কিন্তু ফুল ধরে না : বনস্পতি।
যে গাছ কোনো কাজে লাগে না : আগাছা।
যে গাছ অন্য গাছকে আশ্রয় করে বাঁচে : পরগাছা।
যে গাছ ফল পাকলে মরে যায় : ওষধি।
যে গাছ থেকে ঔষধ তৈরি করা হয় : ঔষধি।১৯. ক্ষুদ্র
- ক্ষুদ্র হাঁস : পাতিহাঁস।
ক্ষুদ্র শিয়াল : খেঁকশিয়াল।
ক্ষুদ্র লেবু : পাতিলেবু।
ক্ষুদ্র রাজা : রাজড়া।
ক্ষুদ্র চিহ্ন : বিন্দু।
ক্ষুদ্র বাগান : বাগিচা।
ক্ষুদ্র প্রস্তরখণ্ড : নুড়ি।
ক্ষুদ্র নাটক : নাটিকা।
ক্ষুদ্র নদী : সারণি।
ক্ষুদ্র ঢাক : নাকাড়া।
ক্ষুদ্র গ্রাম : পল্লিগ্রাম।
ক্ষুদ্র গাছ : গাছড়া।
ক্ষুদ্র অঙ্গ : উপাঙ্গ।
ক্ষুদ্র ঘোড়া : টাট্টু।২০. অন্যান্য
- ইতিহাস রচনা করেন যিনি : ঐহিতাসিক।
ইতিহাস বিষয়ে অভিজ্ঞ : ইতিহাসবেত্তা।
ব্যাকরণে পণ্ডিত যিনি : বৈয়াকরণ।
যিনি ব্যাকরণ রচনা করেন : ব্যাকরণবিদ।
স্মৃতিশাস্ত্র রচনা করেন যিনি : শাস্ত্রকার।
স্মৃতিশাস্ত্রে পণ্ডিত যিনি : শাস্ত্রজ্ঞ।
স্মৃতিশাস্ত্র জানেন যিনি : স্মার্ত।২১. অন্যান্য
- দনুর পুত্র : দানব।
ঈষৎ উষ্ণ : কবোষ্ণ।
সদ্য দোহনকৃত উষ্ণ দুধ : ধারোষ্ণ।
তৃণাচ্ছাদিত ভূমি : শাদ্বল।
গরুর খুরে চিহ্নিত স্থান : গোস্পদ।
আকাশে উড়ে যে : খেচর।
মৃতজন্তু ফেলা হয় যেখানে : ভাগাড়/ উপশল্য।
যা জ্বলে উঠেছে : উদ্দীপ্ত।
যা নিজের ধারা অর্জিত : স্বোপার্জিত।
গৃহীত হচ্ছে এমন : নীয়মান।
যে বন হিংস্র জন্তুতে পরিপূর্ণ : শ্বাপদসংকুল।
চারদিকে জলবেষ্টিত স্থলভাগ : দ্বীপ।
পা দিয়ে চলে না যে : পন্নগ (সর্প)।
দুটি মাত্র দাঁত যার : দ্বিরদ (হাতি)।
চারিদিকে স্থলবেষ্টিত জল যার : হ্রদ।
আকৃষ্ট হয়েছে যে : কৃষ্যমাণ।
যা মাটি ভেদ করে উঠে : উদ্ভিদ।
কোথাও নিচু, কোথাও উঁচু : বন্ধুর।
অরিকে (শত্রু) দমন করে যে : অরিন্দম।
রেশম দিয়ে নির্মিত : রেশমী।
অজ (ছাগল) কে গ্রাস করে যা : অজগর।
অভ্র (মেঘ) লেহন/ স্পর্শ করে যা : অভ্রংলিহ।
অবিববাহিত জ্যেষ্ঠা থাকতে কনিষ্ঠার বিয়ে : অগ্রেদিধিষু।
পূর্বে কোনো শিক্ষালাভ না করা সত্তে¡ও যে পারদর্শিতা : অশিক্ষিতপটু।
একান্ত উদ্দেশ্য নায়ক-নায়িকার গমন : অভিসার।
অশ্ব, রথ, হস্তী ও পদাতিক সৈন্যের সমাহার : চতুরঙ্গ।
বড় ভাই থাকতে ছোট ভাইয়ের বিবাহ : পরিবেদন।
দুই রথীর যুদ্ধ : দ্বৈরথ।
গ্রন্থাদির টিকা : দীপিকা।
জনকের কন্যা : জানকী।
জায়া ও পতি : দম্পতি।
উপদেশ ছাড়া লব্ধ প্রথম জ্ঞান : উপজ্ঞা।
চর্বিত চর্বণ প্রক্রিয়া : রোমন্থন।
অতিশয় উৎকণ্ঠিত/ প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়েছে এমন : লবেজান।
ক্রমে বর্ধিত হচ্ছে যা : ক্রমবর্ধমান।
নাভি পর্যন্ত লম্বিত হার : ললন্তিকা (গিরগিটি)।
উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ধন : রিকথ।
হাতির শাবক : করভ।
রোদে শুকানো আম : আমশি।
রক্ত বর্ণ পদ্ম : কোকনদ।
পদ্মের ডাঁটা বা নাল : মৃণাল।
সন্ন্যাস নিয়ে ভ্রমণ : প্রব্রজ্যা।
হরিণের চর্ম : অজিন।
ব্যাঙের ছানা : ব্যাঙাচি।
সাপের খোলস : নির্মোক / কঞ্চুক।
হাতির পিঠে বসার স্থান : হাওদা।
মাসের শেষ দিন : সংক্রান্তি।
অনেক দেখে অভিজ্ঞতা করেছেন যিনি : ভূয়োদর্শী।
অনেকের মধ্যে একজন : অন্যতম।
অনেকের মধ্যে প্রধান : শ্রেষ্ঠ।
একের পরিবর্তে অনেক : বিকল্প।
অর্থহীন উক্তি : প্রলাপ।
আবক্ষ জলে নেমে স্নান : অবগাহন।
আশা ভঙ্গ জনিত খেদ : বিষাদ।
ইষ্টক নির্মিত গৃহ : অট্টালিকা।
ঈশ্বরের ভাব : ঐশ্বর্য।
ঈশ্বর বিষয়ক : ঐশ্বরিক।
উদ্ভিদের নতুন পাতা : পল্লব।
ঋণ শোধে অসমর্থ : দেউলিয়া।
ঋতুতে যজ্ঞ করেন যিনি : ঋত্বিক।
ক্রিয়ার বিপরীত : প্রতিক্রিয়া।
সরকারি দলিলপত্র রাখার ঘর : মহাফেজখানা।
ছয় মাস অন্তর : ষাণ্মাসিক।
থাবার আঘাত : থাপ্পড়।
তুমুল ঝগড়া : তুলকালাম।
তালু থেকে উচ্চারিত : তালব্য।
ধ্যান করেন যিনি : ধ্যানী।
ধ্যানে যিনি মগ্ন : ধ্যানস্থ।
নলের আকারে জমানো বরফ : কুলফি।
নাড়িজ্ঞান নেই যার : আনাড়ি।
পূর্ণিমার চাঁদ : রাকা।
বহু গৃহ থেকে ভিক্ষা গ্রহণ করে : মাধুকরী।
রব শুনে এসেছে যে : রবাহূত।
যে সব অত্যাচারেই সয়ে যায় : সর্বংসহা।
যে জমিতে ফসল জন্মায় না : ঊষর।
শাসন করা যায় যাকে : শিষ্য।
ময়ূরের মতো দেখতে এমন নৌকা : ময়ূরপঙ্খী।
রাজার মাথায় যা শোভা পায় : রাজমুকুট।
সুন্দরবন থেকে যারা মধু সংগ্রহ করে : মৌয়াল।
আকাশ ও পৃথিবী বা স্বর্গ ও মর্ত্য : ক্রন্দসী।
শত্রুকে জয় করেছে যে : শত্রুজিৎ।
ইন্দ্রকে জয় করেছে যে : ইন্দ্রজিৎ। -
২২. সংশয়মূলক কিছু শব্দ-
- সার্বজনীন : সকলের মধ্যে প্রবীণ।
সর্বজনীন : সকলের জন্য কল্যাণকর/ সকলের জন্য অনুষ্ঠিত।
ক্ষমার্হ : ক্ষমার যোগ্য।
ক্ষমার্য : ক্ষমার অযোগ্য।
কৃতজ্ঞ : উপকারির উপকার স্বীকার করে যে।
অকৃতজ্ঞ : উপকারির উপকার স্বীকার করে যে।
কৃতঘ্ন : উপকারির অপকার করে যে।
জানবার ইচ্ছা : জিজ্ঞাসা।
জানবার যোগ্য : জ্ঞাতব্য।
- আরও পড়ুন : বাগধারার প্রতিশব্দ বাগধারা
- অনুশীলন বাংলা ব্যাকরণ বইতে তথ্যগুলো পাবেন।