পদ্মা- ফররুখ আহমদ

পদ্মা (পদ্মার সাথে জীবনের একাত্মতা)

অনেক ঘূর্ণিতে ঘুরে (ঘূর্ণিবায়ু পেরিয়ে), পেয়ে ঢের সমুদ্রের স্বাদ (জলদস্যুদের সমুদ্র জয়ের অভিজ্ঞতা)
জীবনের পথে পথে অভিজ্ঞাতা কুড়ায়ে প্রচুর

কেঁপেছে তোমাকে দেখে জলদস্যু – দুরন্ত হামার্দ (পর্তুগিজ জলদস্যু), (উত্তাল সমুদ্র জয় করা জলদস্যুরাও প্রমত্ত পদ্মার রূপ দেখে কেঁপে উঠেছে)
তোমার তরঙ্গভঙ্গে (ঢেউ দেখে) বর্ণ তার হয়েছে পাণ্ডুর! (পদ্মার ভয়ংকর স্রোত দেখে জলদস্যুদের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যায়)
সংগ্রামী মানুষ তবু দুই তীরে চালায়ে লাঙল (পদ্মার তীরে চাষাবাদ করে প্রচুর শস্য পাওয়া)
কঠিন শ্রমের ফল- শস্য দানা পেয়েছে প্রচুর; (পদ্মার কল্যাণময়ী ও ধ্বংসাত্মক রূপ)

(পলির কারণে) উর্বর তোমার চরে ফলায়েছে পর্যাপ্ত ফসল!

জীবন মৃত্যুর দ্বন্দ্বে নিঃসংশয়, নির্ভীক জওয়ান (উন্মত্ত পদ্মাকে ভয় করে না)
(শস্যের সম্ভারে) সবুজের সমারহে জীবনের পেয়েছে সম্বল। (পদ্মার পাড়ে অন্নের সংস্থান)
বর্ষায় তোমার স্রোতে গেছে ভেসে সাজানো বাগান (বহুকষ্টে গোছানো সংসার)
অসংখ্য জীবন, আর জীবনের অজস্র সম্ভার, (বেঁচে থাকার দৈনন্দিন উপকরণ)
হে নদী! জেগেছে তবু পরিপূর্ণ আহব্বান, (পদ্মাকে ঘিরেই নবোদ্যমে জীবন শুরু করা)
(পদ্মার বিধ্বংসী রূপে বিধ্বস্ত) মৃত জড়তার বুকে খুলেছে মুক্তির স্বর্ণদ্বার (গতিময় পদ্মা মানুষের জীবনে নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটায়)

তোমার সুতীব্র গতি; তোমার প্রদীপ্ত স্রোতধারা। (উদ্যমী মানস গঠন)

 

  • পদ্মা কবিতাটি কাফেলা কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে। এটি একটি সনেট কবিতা।
  • আরও পড়ুন- সুচেতনা কবিতার সহজ ব্যাখ্যা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart

You cannot copy content of this page

Scroll to Top