পশ্চিমাদের কথা মানতে হবে কেন?
- আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের জনক বলা হয় পশ্চিমা বিশ্বকে। আবিস্কার, বিজ্ঞান, চিকিৎসা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই আজ তাদের অবদান ফুটিয়ে তোলা হয়। ফলে আমরা বিজ্ঞানীদের তালিকা খুঁজতে গেলে কোনো মুসলমানদের নাম খুঁজে পাই না। আমরা মনে করি, মুসলমানরা হয়তো এই দিক থেকে অনেক পিছিয়ে ছিলাম। সুতরাং বিজ্ঞানের জ্ঞান অর্জনের জন্য অবশ্যই আমাদের পশ্চিমাদের অনুসরণ করতে হবে।
যেমন বলা হয়ে থাকে, বর্তমান বিশ্ব আলোর মুখ দেখেছে রেনেসাঁ বিপ্লবের পর থেকে। এরা আগে সবাই ছিল বর্বর জাতিবিশেষ। ইউরোপের গীর্জা-বাদশার বিরোধই আলোর মুখ দেখতে পায়। এই গীর্জা-সম্রাট বিরোধকে কেন্দ্র করে রেনেসাঁ বিপ্লব দেখা দেয়। জ্ঞান-বিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত তারা খুঁজে পায়।
যার ফলে আমরা মনে করি, ধর্ম ও রাজত্ব আলাদা থাকলেই একটা দেশের উন্নয়ন সম্ভব। কিন্তু কখনো কি কল্পনা করেছেন যে, আসলেই রেনেসাঁ বিপ্লবের পূর্বে আমরা বর্বর হিসেবে পরিচিত ছিলাম। রেনেসাঁ বিপ্লবই কি আলোর মুখ দেখিয়েছিল? - ইতিহাসে কত বড় অন্যায় যে, রেনেসাঁ পূর্ব যুগকে বর্বর যুগ বলা হয়।
কেন, আমরা যুগ বিবেচনার জন্য কেন ইউরোপকে মানদণ্ড হিসেবে নির্ণয় করছি। আমরা কি সারাবিশ্বে একই চিত্র দেখি? দেখুন, রাসুল সা. এর পর থেকে ১৪০০ সাল পর্যন্ত মুসলমানরা সারা বিশ্ব শাসন করেছে। আরব ছিল সভ্যতার উচ্চ শিখরে আরোহিত। ইউরোপের মধ্যে স্পেন ছিল সর্বাধিক সমৃদ্ধ। জ্ঞান-বিজ্ঞানের ফোয়ারা বয়েছিল গ্রানাডাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। ফারাবি-জাবির বিন হাইয়ান-ইবনে কাসির-আলকেমীসহ বিভিন্ন মনীষী তখনকার সোনালি যুগের ফসল। - অন্যদিকে ইউরোপের অবস্থা ছিল, “এক পাদ্রী আট বছর যাবত ইঞ্জিল পড়ছিল কিন্তু সে কখনো গোসল করত না। পবিত্রতার জন্য কেবল আঙুলের মাথা ভিজিয়ে ইঞ্জিল পড়ত।” (স্পেন ও উত্তর আফ্রিকায় মুসলিম শাসনের ইতিহাস, উত্তরণ প্রকাশনী)
ইউরোপের অবস্থা ছিল এমনই খতরনাক। ১৪০০ সালে পর তারা মুসলিম শাসন অনুসরণ করে উন্নতি লাভ করে। কিন্তু উন্নয়নের পরেই বলতে লাগল, রেনেসাঁ পূর্ব সবাই বর্বর। সর্বপ্রথম সভ্যজাতি একমাত্র ইউরোপীয়রা। আর সেটাই আমাদের শিখানো হচ্ছে।
এজন্যই গ্রামাঞ্চলে প্রবাদ আছে, “কার দুয়ারে শিন্নি খাইলি, মোল্লা চিনলি না।”