মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাস- Political History of United States

United States

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাস

 

  • পঞ্চদশ শতাব্দীতে ভারতবর্ষের ঐশ্বর্যের কথা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। স্পেনিশ দম্পতি ফার্ডিনান্ড ও ইসাবেলার অনুপ্রেরণায় ইতালীয় নাবিক কলম্বস ভারতবর্ষের পথ আবিষ্কারের জন্য যাত্রা শুরু করেন। ১৪৯২ সালের ১২ অক্টোবর তিনি বাহামা দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছান। তিনি মনে করেছিলেন যে ভারতবর্ষের পশ্চিমে পৌঁছে গেছেন। তখন থেকেই দ্বীপগুলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ নামে পরিচিত। কলম্বস মোট চারবার স্পেন থেকে আমেরিকা মহাদেশে অভিযান চালান। কিন্তু তিনি বুঝতে পারেননি যে এক নতুন মহাদেশে তিনি পৌঁছেছেন।
    কলম্বসের ভুল প্রথমে ধরিয়ে দেন আরেক ইতালীয় নাবিক আমেরিগো ভেসপুচি (Amerigo Vespucci)। তিনি ১৪৯৯ সালে আমেরিকা মহাদেশে অবতরণ করেন। তাঁর নাম অনুসারেই মহাদেশটির নাম আমেরিকা রাখা হয়।
  • ১৫৬৫ সালে স্পেনিশরা প্রথম ফ্লোরিডাতে স্থায়ী বসতি শুরু করে। ১৬০৭ সালে ব্রিটেন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের জেমস টাউনে উপনিবেশ স্থাপন করে। এটি ছিল উত্তর আমেরিকায় ব্রিটিশদের প্রথম উপনিবেশ। ইংরেজরা সেখানে তামাক উৎপাদন করে। ক্রমান্বয়ে ১৩টি অঙ্গরাজ্যে ব্রিটিশরা উপনিবেশ সৃষ্টি করে। ১৭-১৮ শতাব্দীর মধ্যে প্রায় লক্ষাধিক আফ্রিকান নাগরিককে আমেরিকায় এনে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয় যারা তুলা ও তামাক উৎপাদনের কাজ করে। ১৭৬৩ সালে ব্রিটেন সাত বছরের যুদ্ধে মিসিসিপি নদীর নিকটবর্তী ভূমির দখল পায়।

 

  • চা আন্দোলনের পটভূমি-
    অষ্টাদশ শতাব্দীতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ব্রিটিশদের উপনিবেশ ছিল। এই উপনিবেশগুলো ছিল ব্রিটিশদের রাজস্ব আদায়ের কারখানা। স্থানীয় সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মূলধন বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু উপনিবেশগুলো নিয়ে প্রায়ই যুদ্ধ-বিদ্রোহ লেগে থাকত। যার ফলে খরচ বেড়েই চলে। ১৭৬০ সালে ব্রিটিশ সরকার প্রচুর পরিমাণে ঋণগ্রস্ত পড়ে যায়। দ্রুত এই ঋণ পরিশোধ না করতে পারলে হয়ত উপনিবেশগুলোর অধিকার হারাতে হবে। তাই তারা উপনিবেশগুলোতে রাজস্বের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
    ১৭৬৫ সালে স্টাম্প আইন অনুযায়ী সব ধরনের কাগজের উপর কর আরোপ করা হয়। তারপরও ঋণ পরিশোধ হচ্ছিল না। ১৭৬৭ সালে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য এমনকি চায়ের উপরও কর আরোপ করা হয়। তখন উত্তর আমেরিকার সিংহভাগ ব্রিটিশদের দখলে ছিল। তারাও করের আওতায় ছিল। ১৭৭০ সালের মার্চে এই রাজস্ব কেন্দ্র করে আমেরিকা-ব্রিটিশ সংঘর্ষ হয়। এতে ৫ জন ব্যবসায়ী নিহত ও অনেকেই আহত হয়। ফলে ব্রিটিশরা চাপে পড়ে ১৭৬৭ সালের আইন বাতিল করে।
  • প্রথম চা আন্দোলন-
    পরবর্তীতে ব্রিটিশরা অন্যান্য দ্রব্য থেকে কর উঠিয়ে দিলেও চায়ের উপর কর বহাল থাকে। কারণ, আমেরিকায় বার্ষিক প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ চা পান করত। মার্কিন ব্যবসায়ীরা এই সিদ্ধান্ত মানতে রাজি ছিল না। এর প্রতিবাদে তারা ব্রিটিশ পণ্য বর্জন শুরু করে। ব্যবসায়ীরা ডাচ কোম্পানি থেকে অবৈধভাবে চা পাচার শুরু করে। ব্রিটিশ কোম্পানি দ্রুত লোকসানে পড়ে। তার উপর ১৭৭৩ সালে চা আইন অনুযায়ী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে চায়ের শুল্ক দিতে হত না অথচ উপনিবেশের ব্যবসায়ীদের ঠিকই কর প্রদান করতে হত। কর দেওয়ার আগে বন্দরে ব্যবসায়ীদের চায়ের বস্তা নামানোর অনুমতি দেয়া হত না।
    ব্রিটিশরা মনে করত আমেরিকানরা কখনোই চায়ের স্বাদ ভুলতে পারবে না। তাই চায়ের কর দিবেই। নিয়মিত চা বোঝাই করা জাহাজ ফিলাডেলফিয়া ও নিউইয়র্ক বন্দরে ভিড়তে থাকে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা কর প্রদান করবে না বলে অটল থাকে। হাজার হাজার ব্যবসায়ী একত্র হয়ে কর দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। ব্যবসয়ীদের বিদ্রোহী দল সন্স অব লিবার্টি গঠিত হয়। কিন্তু গভর্নর থমাস হাচিসন ব্যবসায়ীদের দাবি অগ্রাহ্য করেন। কর না দিলে বন্দরে জাহাজ ভিড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। ১৬ ডিসেম্বর ব্যবসায়ীরা তাদের ৩৪২টি চায়ের বস্তা পানিতে ফেলে দেয়। মাত্র দুই ঘন্টার মধ্যে সব জাহাজ খালি হয়ে যায়। সন্স অব লিবার্টির সদস্যরা ভেসে থাকা সব চায়ের প্যাকেট ডুবিয়ে দেয়। এই ঘটনার ফলে আমেরিকান রাজনীতিবিদদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ইতিহাসে এটি বোস্টন টি পার্টি নামে পরিচিত।
  • দ্বিতীয় চা আন্দোলন-
    এই অহিংস আন্দোলনের পর রাজা তৃতীয় জর্জ ব্যবসায়ীদের পাল্টা জবাব দিতে চাইলেন। তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে Coercive Act পাশ করেন। এর মাধ্যমে চায়ের করের ক্ষতিপূরণ আদায়ের পূর্ব পর্যন্ত বোস্টন বন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আমেরিকানরাও পাল্টা জবাব হিসেবে ১৭৭৪ সালে ফরচুন নামে একটি জাহাজের ৩০ বস্তা চা পানিতে ফেলে দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় নিউইয়র্কে আন্দোলন শুরু হয়। ১৭৭৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশ থেকে প্রতিনিধিরা (1st Continental Congress) একত্র হয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দেয়। যথা-

    ক. অতিসত্বর Coercive Act বাতিল করে বোস্টন বন্দরের কাজ শুরু করতে হবে।
    খ. সকল ব্রিটিশ পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
    গ. আমেরিকা মহাদেশের সকল উপনিবেশকে স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে।
    ঘ. উপনিবেশে স্থানীয় সৈনিকদের নিজস্ব বাহিনী গঠন করতে হবে।

 

USA independence
  • আমেরিকার স্বাধীনতা-
    ১৭৭৫ সালে জর্জ ওয়াশিংটন আমেরিকান বাহিনীর নেতৃত্ব নেন এবং ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই আমেরিকার ১৩টি অঙ্গরাজ্য (আমেরিকান কংগ্রেস) স্বাধীনতার ঘোষণা করে। এজন্য ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়।
  • যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা সংগ্রামের সেনাপতি ছিলেন জর্জ ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধানতম কারণগুলো নিম্নরূপ-
    ক. রাজা তৃতীয় জর্জের স্বেচ্ছাচারিতা
    খ. স্ট্যাম্প অ্যাক্ট (১৭৬৫)
    গ. বোস্টন হত্যাকাণ্ড (১৭৭০)
    ঘ. চা আইন (১৭৭৩)
  • স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র : টমাস জেফারসনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের কমিটি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র রচনা করেন। কমিটির সদস্য ছিলেন : John Adams, Benjamin Franklin, Thomas Jefferson, Roger Sherman I Robert Livingston.
  • যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতায় প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে ফ্রান্স। ১৭৭৮ সালের Treaty of Alliance  অনুসারে ফ্রান্স আটলান্টিক মহাসাগরে ব্রিটিশ নৌ বাহিনীকে প্রতিরোধ করে এবং আমেরিকানদের সামরিকভাবে সাহায্য করে। ফলে ব্রিটিশ সেনাপতি লর্ড কর্নওয়ালিস অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন এবং ১৭৮১ সালে আত্মসমর্পণ করেন। ১৭৮৩ সালে ৩ সেপ্টেম্বর প্যারিসে চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনতা অর্জন করে।
  • প্যারিস চুক্তি (১৭৮৩) : এটি মূলত একক চুক্তি নয়, এতে চারটি চুক্তি অন্তর্ভূক্ত আছে। যার একপক্ষে ছিল ব্রিটেন অপরপক্ষে ছিল আমেরিকা, ফ্রান্স, স্পেন ও নেদারল্যান্ডস। প্রথম চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্র-ব্রিটেনের মধ্যে ১৭৮২ সালের ৩০ নভেম্বর প্যারিসে স্বাক্ষরিত হয়। ১৭৮৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বাকি তিনটি চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। যথা-
    ক. আমেরিকা-ব্রিটেন (প্যারিস) : ব্রিটেন আমেরিকাকে স্বাধীনতা দেয়। এমনকি মিসিসিপি নদীর নিকটবর্তী এলাকাগুলোও ছেড়ে দেয়। তবে কানাডা ব্রিটিশদের অধীনেই রয়ে যায়।
    খ. ব্রিটেন-ফ্রান্স-স্পেন (ভার্সাই) : ব্রিটেন টোবাগো ও সেনেগাল ফ্রান্সকে হস্তান্তর করে। স্পেন মিনোরকা (Minorca) দ্বীপ ও ফ্লোরিডার কিছু অংশ দখল অব্যাহত রাখে। যদিও স্পেন ব্রিটেন থেকে জিব্রাল্টার প্রণালির দখল চাচ্ছিল।
    গ. ব্রিটেন-নেদারল্যান্ডস (২ সেপ্টেম্বর, ১৭৮৩) : নেদারল্যান্ডস তেমন সুবিধা করতে পারেনি। তারা ভারতে অবস্থিত Nagapattinam বন্দর ব্রিটেনকে ছেড়ে দেয় এবং মালাক্কায় ব্রিটিশদের প্রবেশাধিকার দেয়। মূলত ডাচরা ব্রিটেনের সাথে শত্রুতা মিটিয়ে ফেলতে চেয়েছিল।
    পরবর্তীতে ডাচ-ব্রিটেন ১৭৮৪ সালের ২০ মে একটি চূড়ান্ত শান্তিচুক্তিতে পৌঁছে। যার মাধ্যমে চতুর্থ অ্যাংলো-ডাচ যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
  • যুক্তরাষ্ট্র ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও একটি স্বাধীন ফেডারেল জেলা (District of Columbia) নিয়ে গঠিত। কলম্বিয়া ডিসি থেকে সিনেটে কোনো প্রতিনিধি থাকে না।
  • ১৮০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্সের নিকট থেকে লুজিয়ানা স্টেটটি কিনে নেয়। ১৮১২ সালে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে লুজিয়ানাকে যুক্তরাষ্ট্রের ১৮তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। লুজিয়ানার রাজধানী Baton Rouge
  • ১৮৬৭ সালে রাশিয়া থেকে আলাস্কা ভূখণ্ডটি ক্রয় করা হয়।
  • সিনেটররা ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
  • হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ সদস্যরা দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হন।

 

আমেরিকার গৃহযুদ্ধ

US civil war
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ (১৮৬১-৬৫) : যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ মার্কিন ফেডারেল সরকার আর বিপ্লবী ১১টি দাসনির্ভর প্রদেশের মাঝে সংঘটিত হয়। আমেরিকান কনফেডারেসির রাষ্ট্রপতি জেফারসন ডেভিসের নেতৃত্বে ১১টি প্রদেশ পূর্বেই নিজেদেরকে মূল যুক্তরাষ্ট্র থেকে আলাদা ঘোষণা করে নাম দেয় Confederate States of America. এদের বিরুদ্ধে ছিলেন রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিংকন ও মার্কিন রিপাবলিকান দল যারা দাস প্রথার ঘোর বিরোধী ছিলেন।

    অন্যদিকে দক্ষিণের রাজ্যগুলো ছিল কৃষি নির্ভর এবং সেখানে দাসদের ব্যবহার করা হত। যার ফলে লিংকনের দাস বিলুপ্ত প্রথা মেনে না নিয়ে দক্ষিণের ৭টি রাজ্য (সাউথ ক্যারোলিনা-মিসিসিপি-ফ্লোরিডা-অ্যালাবামা-জর্জিয়া-লুইজিয়ানা ও টেক্সাস) যুদ্ধ ঘোষণা করে। পরবর্তী সময়ে অপর চারটি অঙ্গরাজ্য গৃহযুদ্ধে অংশ নেয়। গৃহযুদ্ধে দাসপ্রথা বিরোধীরা বিজয়ী হয় এবং আমেরিকা থেকে দাস প্রথা বিলুপ্ত হয়। তবে এর জের ধরেই ১৮৬৫ সালে আব্রাহাম লিংকন গুপ্তহত্যার শিকার হন।
     
US election process

 

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনি প্রক্রিয়া-

প্রতি চার বছর পর নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পরের মঙ্গলবার পপুলার ভোট হয়।
যেখানে প্রার্থীরা এটা নির্বাচন করে যে, তাদের রাজ্যের ইলেক্টরাল ভোট কোন দলের পক্ষে যাবে।

জনগণের রায় অনুসারে ডিসেম্বরের শেষে ইলেক্টরাররা প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নির্বাচন করে। জানুয়ারিতে সব ভোটের ফল কংগ্রেসে পৌঁছে। পপুলার ভোট আর ইলেক্টরাল কলেজের ভোট যে সর্বদা এক হবে এমন কোনো কথা নেই। যদি কোনো কারণে উভয় ভোটের মধ্যে পার্থক্য দেখা দেয় তবে ইলেক্টরাল ভোটকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।

  •  নির্বাচন প্রক্রিয়া এমন কেন?
    মানুষ চাইলেও যাতে নিজেদের পদ্ধতির বাইরে কাউকে ক্ষমতায় বসাতে না পারে সেজন্য দেশটির ফাউন্ডিং ফাদার তথা স্বাধীনতা আন্দোলনকারীরা এ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। তখন তারা এর নাম দেন মিনি কংগ্রেস। পরে এটি ইলেক্টোরাল কলেজ হিসেবে পরিচিতি পায়।
    ১৭৮৭ সালে মার্কিন ডেলিগেটরা এই পদ্ধতি চালু করেন। জনগণ সঠিক লোককে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারে কিনা, এমন আশঙ্কা থেকে তারা এই পদ্ধতি চালু করেন।
  • পপুলার ভোট : প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন প্রার্থীরা সারা দেশে ভোটারদের কাছ থেকে যেসব ভোট পান সেগুলোকে বলা হয় পপুলার ভোট। কোনো রাজ্যে যে প্রার্থী সর্বাধিক পপুলার ভোট পাবেন তিনি ঐ রাজ্যের সবগুলো ইলেক্টরাল ভোট পাবেন।
  • ইলেক্টরাল ভোট : ইলেক্ট্ররাল কলেজের ভোটগুলোকে বলা হয় ইলেক্টোরাল ভোট। ইলেক্টরাল ভোটের ক্ষেত্রে Winner takes all নীতি অনুসরণ করা হয়। অর্থাৎ একটি রাজ্যে পপুলার ভোট যে বেশি পাবে সে দল ঐ রাজ্যের সব ইলেক্টরাল ভোট পাবে। যেমন-
    ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে ৫৫টি ইলেক্টরাল ভোট আছে। এখন কোনো দল যদি সেই রাজ্যে ৫০.১% ভোট পায় তবে সে দলটি ক্যালিফোর্নিয়ার ৫৫টি ইলেক্টরাল ভোট পাবে। এজন্য দেখা যায়- সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে পপুলার ভোট বেশি পেলেও Winner takes all নীতির কারণে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া যায় না। মেইন আর নেব্রাক্সা রাজ্য ছাড়া সব রাজ্যে Winner takes all নীতি অনুসরণ করা হয়।


    যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফলাফল নির্ভর করে ৫৩৮টি ইলেক্টরাল ভোটের উপর। প্রতিটি রাজ্যের জনসংখ্যার ভিত্তিতে এই ভোট নির্ধারণ করা হয়। যেমন- জনবহুল ক্যালিফোর্নিয়ার ইলেক্টরাল ভোট সংখ্যা ৫৫টি। আবার স্বল্প জনসংখ্যার মন্টানার রয়েছে মাত্র তিনটি ভোট। প্রেসিডেন্ট হতে হলে ন্যূনতম ২৭০টি ইলেক্টরাল ভোট পেতে হবে। একটি রাজ্যে পপুলার ভোট যে বেশি পাবে, সেই রাজ্যে সব ইলেক্টরাল ভোট তিনিই পাবেন।
  • ব্যাটল গ্রাউন্ড বা সুইং স্টেট : ক্যালিফোর্নিয়ায় ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন আবার টেক্সাসে রিপাবলিকান প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন বলে ধরে নেওয়া হয়। কাজেই এই রাজ্যগুলো ব্যাটল গ্রাউন্ড হয়ে উঠে না। যেসব রাজ্যে উভয় দলই বেশি ভোট পেতে পারে, সেক্ষেত্রে ‘রণক্ষেত্র’ তৈরি হয়। যেমন- ফ্লোরিডা, ভার্জিনিয়া, আইওয়া, কলোরাডো ইত্যাদি রাজ্য।
  • সিনেটর নির্বাচন : মার্কিন সিনেট গঠনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিষয় প্রতিটি অঙ্গরাজ্য থেকে সম-প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা। অঙ্গরাজ্যগুলোর আয়তন ও জনসংখ্যার তারতম্য থাকলেও প্রতিটি অঙ্গরাজ্য থেকে ২ জন করে সদস্য নিয়ে সিনেট গঠিত হয়। মার্কিন সিনেটের সদস্য হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত আছে। যথা-
    ক. প্রার্থীকে কমপক্ষে ৩০ বছর বয়স্ক হতে হবে
    খ. কমপক্ষে ৯ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে
    গ. যে অঙ্গরাজ্য থেকে প্রার্থী হবেন, তাঁকে সে রাজ্যের অধিবাসী হতে হবে।১৯১৪ সাল পর্যন্ত প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের সিনেটর পার্লামেন্ট কর্তৃক পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হতেন। কিন্তু ১৯১৪ সালে মার্কিন সংবিধানের ১৭তম সংশোধনীর মাধ্যমে এই ব্যবস্থা বাতিল করে প্রত্যেক অঙ্গরাজ্যের প্রাপ্ত বয়স্ত নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে সিনেটর নির্বাচিত হন।
    সিনেট সদস্যরা ৬ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। প্রতি ২ বছর পর সিনেটের এক-তৃতীয়াংশ সদস্য অবসর নেন এবং সে স্থলে নতুন সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু একই সময়ে কোনো অঙ্গরাজ্য থেকে ২ জন সদস্য নির্বাচিত হন না। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তারা নির্বাচিত হয়ে থাকেন। ফলে একই রাজ্য থেকে দুটি পৃথক রাজনৈতিক দল সিনেটে তাদের প্রতিনিধি পাঠাতে পারে।
  • ইলেক্টোরাল কলেজ : ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮টি। প্রেসিডেন্ট হতে হলে ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোটের প্রয়োজন। সবচেয়ে বেশি ইলেক্টোরাল ভোট আছে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে (৫৫টি)।
    ১৭৮৭ সাল থেকেই ইলোক্ট্ররাল কলেজের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে মোট পাঁচবার এমন হয়েছে যে সাধারণ নির্বাচনে সর্বাধিক ভোট পেয়েও ইলেক্ট্ররাল ভোটের কারণে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেন নি।
  • আয়তনে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম অঙ্গরাজ্য আলাস্কা ও ক্ষুদ্রতম অঙ্গরাজ্য রোড দ্বীপপুঞ্জ।
  • জনসংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়া ও ক্ষুদ্রতম অঙ্গরাজ্য উয়মিং।
  • মার্কিন সংবিধানের জনক জেমস এডিসন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান পৃথিবীর প্রাচীনতম লিখিত সংবিধান। ১৭৮৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান প্রণীত হয় এবং ১৭৮৯ সালের ৪ মার্চ তা কার্যকর করা হয়। ১৭৯১ সালে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করা হয় যা বিল অব রাইটস নামে পরিচিত।
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুসারে কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না।
    তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট (১৯৩৩-৪৫) টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় ছিলেন। (যদিও তখন পর্যন্ত এটি প্রথা ছিল, আইন হিসেবে পাশ করা হয়নি)
    ১৯৫১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে ২১তম সংশোধনীতে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার কথা বলা হয়।
  • যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার নাম কংগ্রেস। এটি দুই কক্ষ বিশিষ্ট। সিনেট ও হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ।
    বর্তমান সিনেট সদস্য ১০০ জন ও হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ ৪৩৫ জন।
  • যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা ইউনিট : Cyber Threat Intelligence Integration Center.
  • প্রেসিডেন্ট পরিবারের নিরাপত্তা দানকারী গোয়েন্দা সংস্থা : USSS.
  • শান্তিতে নোবেলপ্রাপ্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট : রুজভেল্ট-উড্রো উইলসন-জিমি কার্টার-বারাক ওবামা।
  • বিশ্বের সবচেয়ে বড় খুচরা পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান : ওয়ালমার্ট।
  • গুয়াম প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমাংশে অবস্থিত একটি দ্বীপ। রাজধানী হাগানা (Hagåtña)।
    চামোরো (Chamorro) জনগোষ্ঠি এখানকার আদি অধিবাসী।
White House

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন। এর পূর্বনাম President’s House/ Executive Mansion.
১৮০০ সালে আইরিশ স্থপতি জেমস হোবান এটি নির্মাণ করেন। দ্বিতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এ্যাডামস এতে প্রথম বসবাস করেন। (নির্মাণ কাজ চলায় প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন এতে বসবাস করতে পারেননি)
১৮১২-১৮১৫ সালে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আমেরিকার দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়। যুদ্ধ চলাকালীন ১৮১৪ সালে ব্রিটিশ বাহিনী ভবনটি পুড়িয়ে দেয়। ভবনটির একটি ক্ষুদ্র অংশ বাদে প্রায় সমগ্র অংশই পুড়ে যায়। ১৯০২ সালে পুরোনো নকশানুযায়ী ভবনটি পুনঃনির্মাণ করা হয়। ভবনটি বিভিন্ন স্থানে লেগে থাকা ধোঁয়া ও আগুনের দাগ মুছতে সাদা প্রলেপ দেওয়া হয়। তখন থেকেই ভবনটি White House নামে পরিচিত। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট নামটির স্বীকৃতি দেন।

  • যুক্তরাষ্ট্র ইউনিয়নে সর্বশেষ যোগ দেয় : হাওয়াই (১৯৫৯)।
  • যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষাবাহিনীর মোট ফোর্স সাতটি। যথা- Army, Marine Crops, Navy, Air Force, Space Force, Coast Guard, National Guard.
  • ওভাল অফিস : হোয়াইট হাউজের অংশবিশেষ ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি কার্যালয়।
  • যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি-
    ১. যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইন-১৯৬৫/ Hart–Celler Act : এই আইনে বলা আছে যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা যে কোনো দক্ষ বিদেশি নাগরিক আশ্রয় প্রার্থনা করতে পারবেন।
    ২. চতুর্দশ সংশোধনী-১৮৬৮ : ক্রীতদাসদের নাগরিকত্ব দিতে এই সংশোধনী আনা হয়। এতে বলা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিলেই সে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাবে।
  • ড্রিমার্স প্রকল্প/ Deferred Action for Childhood Arrivals (DACA) : এটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি নামে পরিচিত।
  • Gettysburg Address (গেটিসবার্গ ভাষণ) : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি শহর গেটিসবার্গ। ১৮৬৩ সালে মার্কিন গৃহযুদ্ধ চলাকালীন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত গেটিসবার্গবাসীদের জন্য দুই মিনিট ক্ষণস্থায়ী যে ভাষণ দেওয়া হয়, সেটিই গেটিসবার্গ ভাষণ নামে পরিচিত। এই ভাষণে আব্রাহাম লিংকন গণতন্ত্রকে নতুন সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করেন।

Monroe Doctrine

১৮২৩ সালে ঘোষিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি পররাষ্ট্রনীতি। এর মূল বক্তব্য ছিল- “ইউরোপীয় কোনো দেশ যদি পশ্চিম গোলার্ধের কোনো দেশের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে যা তাদের স্বাধীনতার পরিপন্থী তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেখানে বাধা দিবে।” এই নীতিকে বিচ্ছিন্ন থাকার নীতি বা Policy of Isolation বলা হয়।
এই নীতির উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে-
ক. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজ ভৌগোলিক সীমানার বাইরে অন্য কোনো দেশের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না।
খ. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের কোনো প্রকার রাজনীতিতে অংশ নিবে না।
গ. ল্যাটিন আমেরিকান কোনো দেশে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের প্রভাব মেনে নিবে না।

  • মনরো নীতির প্রেক্ষাপট : জেমস মনরো যখন তার ঘোষণাটি দেন, তখন আলাস্কা রাশিয়ার অধীন ছিল। রাশিয়ার সম্রাট প্রথম আলেকজান্ডার আলাস্কাকে কেন্দ্র করে পশ্চিম গোলার্ধে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। এজন্য তিনি স্পেনের সম্রাটকে সমর্থন করছিলেন। স্পেন মেক্সিকোতে তার প্রভাব বজায় রাখতে চাচ্ছিল। কিন্তু তখন মেক্সিকো ক্যালিফোর্নিয়ার অধীন ছিল। এই সময়েই মার্কিন রাষ্ট্রপতি মনরো এই নীতি ঘোষণা করেন।
    ১৮১০-১৮২১ সালে স্পেনিশ-মেক্সিকান যুদ্ধের ক্যালিফোর্নিয়ার অংশ হিসেবে মেক্সিকো স্বাধীনতা অর্জন করে। ১৮৪৮ সালে মার্কিন-মেক্সিকান যুদ্ধের মাধ্যমে মেক্সিকো নতুন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
  • মার্টিন লুথার কিং : মার্কিন নিগ্রোদের অধিকার আদায়ে অহিংসবাদী নেতা ছিলেন। ১৯৬৩ সালে ওয়াশিংটনে লংমার্চের নেতৃত্ব দেন। সেখানেই তিনি বিখ্যাত I have a dream ভাষণ দেন। ১৯৬৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬৮ সালে আততায়ীর গুলিতে মারা যান। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন না।
  • Bradley Effect কথাটি যে দেশের নির্বাচনের সাথে জড়িত : যুক্তরাষ্ট্র।
  • মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কর্তৃক পরিচালিত সন্ত্রাস বিরোধী কর্মসূচির নাম : Terrorist Interdiction Program (TIP).
  • এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি : আসিয়ান জোটকে সমর্থন করা।
  • ১৯২০-১৯৩৩ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ ছিল।
  • উল্লেখযোগ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট-
    জর্জ ওয়াশিংটনযুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনতা যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ও আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট।
    আব্রাহাম লিংকন১৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর শাসনামলে আমেরিকায় গৃহযুদ্ধ হয়। ১৮৬৫ সালে তিনি দাসপ্রথা নিষিদ্ধ করেন। ১৮৬৫ সালে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন।
    ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টএকমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি পরপর ৩ বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। মার্কিন অর্থনীতির মহামন্দা (Great Depression) দূর করার জন্য ১৯৩৩ সালে New Deal ব্যবস্থা চালু করেন।
    হ্যারি ট্রুম্যানদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বোমা ফেলার নির্দেশ দেন। কমিউনিজম প্রতিরোধে ট্রুম্যান ডকট্রিন নামে একটি প্রচলন করেন।
    জন এফ কেনেডিকিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটকালীন প্রেসিডেন্ট। পুলিৎজার বিজয়ী একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
    রিচার্ড নিক্সনবাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ১৯৭২ সালে ওয়াটারগেট কেলেংকারির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি প্রেসিডেন্ট পদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
    বারাক ওবামাআমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট।
  • যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য স্থান-
    ফিলাডেলফিয়ামার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণাস্থল
    ইন্ডিপেনডেন্স হলফিলাডেলফিয়ায় অবস্থিত স্বাধীনতা ভবন
    পেন্টাগনওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাহিনীর সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর
    ভার্জিনিয়ামার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর
    ওয়াশিংটননাসার সদর দপ্তর
    কেপকেনেডিফ্লোরিডায় অবস্থিত নাসার উৎক্ষেপণ কেন্দ্র
    লস এঞ্জেলসক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত চলচ্চিত্র শিল্প কেন্দ্র
    গুয়েনতানামা বেকিউবায় অবস্থিত মার্কিন কারাগার
    গ্রাউন্ড জিরোনিউইয়র্কে টুইন টাওয়ারে ধ্বংসস্থলে অবস্থিত নির্মিত ভবন
    ওয়েস্ট পয়েন্টনিউইয়র্কে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক একাডেমি
    ডিজনিল্যান্ডক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত বিখ্যাত পার্ক
    সানফ্রান্সিসকোবিখ্যান গোল্ডেন গেট সেতু অবস্থিত

 

যুক্তরাষ্ট্রের মহামন্দা (১৯২৯-১৯৩৮)

Great Depression
  • যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মন্দা : পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দা (১৯২৯-১৯৩৮) সংগঠিত হয়েছিল আমেরিকায়। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে ভয়াবহ ধসের মাধ্যমে এর সূত্রপাত ঘটে। ফলে প্রায় দেড় কোটি আমেরিকান বেকার হয়ে পড়ে, ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে যায়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত মেক্সিকান শরণার্থীদের একাংশ নির্যাতনের ভয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হন।
    ১৯২০ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। তখন দেশটির অর্থনীতি দ্বিগুণ হারে বাড়তে থাকে। এসময় মার্কিন প্রশাসন কৃষি ও রেলখাতে উন্নয়ন কাজ শুরু করেছিল। নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদির কাজও শুরু হয়। ফলে লক্ষ লক্ষ নাগরিকের স্থায়ী কর্মসংস্থান তৈরি হয় এবং উল্লেখযোগ্য হারে তারা আয় করতে থাকেন। প্রায় সকল নাগরিকের হাতে প্রচুর অর্থ ছিল।
    এই কারণে অনেকেই শেয়ার বাজারের দিকে ঝুঁকে পড়েন। কেউ কেউ নিজেদের ব্যবসা গুটিয়ে স্থায়ী বিনিয়োগকারী হয়ে ওঠেন। বাবুর্চি থেকে শুরু করে কারখানার শ্রমিক প্রায় সবাই শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করেন।
    ১৯২৯ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার চরম শিখরে আরোহণ করে। কিন্তু সে বছরের গ্রীষ্মে দেশটির জাতীয় উৎপাদন হ্রাস পেতে থাকে এবং মার্কিন নাগরিকরা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগে মনোনিবেশ করায় কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।
    ১৯২৯ সালের ২৪ অক্টোবর শেয়ার বাজারে ব্যাপক ধস নামে। একদিনেই প্রায় ১২.৯ মিলিয়ন শেয়ার বিক্রি হয়ে যায়। আর এটিকে সুযোগ ভেবে লক্ষ লক্ষ লোক ব্যাংক থেকে ঋণ করে শেয়ার কিনে। যুক্তরাষ্ট্রের মহামন্দার ইতিহাসে এটি Black Thursday নামে পরিচিত। মূলত সেদিনই মহামন্দার সূত্রপাত ঘটে। ১৯৩৩ সালের মধ্যে প্রায় সব শহরের ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায়। বেকার নাগরিকদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ মিলিয়নে।
    এরই জেরে রিপাকলিকানরা নির্বাচনে পরাজিত হয়। ডেমোক্রেটরা ক্ষমতায় এসে বড় বড় প্রকল্পগুলো শুরু করে। নতুন করে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ফলে নাগরিকরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আবার চাঙা হয়ে ওঠে।
    তখন মেক্সিকান নাগরিকদের বিতাড়নের কারণে পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে। ২০১৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার আদালত একটি আইন পাশ করে যার মধ্য দিয়ে ৩০ এর দশকের মেক্সিকানদের অবৈধভাবে বিতাড়নের সেই নির্মম ঘটনা পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।

  • এই সংক্রান্ত সব আলোচনা অনুশীলন আন্তর্জাতিক বইতে পাবেন-

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart

You cannot copy content of this page

Scroll to Top