যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাস - History of United Kingdom

যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাস- Important History of United Kingdom

যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাস

 

  • ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ড নিয়ে United Kingdom গঠিত। ১৯৪৫ সালে লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলে উপনিবেশভুক্ত দেশসমূহকে স্বাধীনতা দিতে শুরু করে।

United Kingdom

ইংল্যান্ড গঠিত হয় : ৯২৫ সালে।
ওয়েলস ইংল্যান্ডের সাথে যুক্ত হয় : ১৫৩৬ সালে।
স্কটল্যান্ড ইংল্যান্ডের সাথে যুক্ত হয় : ১৭০৭ সালে।
উত্তর আয়ারল্যান্ড গ্রেট ব্রিটেনের সাথে যুক্ত হয় : ১৯২২ সালে।

অনেকেই Great Britain ও United Kingdom কে একই অর্থে ব্যবহার করেন। কিন্তু বিষয়টি এক নয়।
**United Kingdom/ যুক্তরাজ্য : গ্রেট ব্রিটেন ও উত্তর আয়ারল্যান্ডকে একত্রে যুক্তরাজ্য বলা হয়।
**Great Britain : ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসকে একত্রে গ্রেট ব্রিটেন বলা হয়।

 

  • যুক্তরাজ্যের চারটি দেশেরই আলাদা সরকার ব্যবস্থা থাকলেও তারা ব্রিটিশ সরকার দ্বারা প্রভাবিত
  • সরকার পদ্ধতি : শাসনতান্ত্রিক রাজতন্ত্র। ১৬৮৮ সালে গৌরবময় বিপ্লবের মাধ্যমে ব্রিটেনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • সংসদীয় গণতন্ত্রের উৎপত্তি দেশ : যুক্তরাজ্য।
  • ব্রিটেনের শাসনতান্ত্রিক প্রবচনসমূহ-
    The King is dead, long live the king.
    The King never dies.
    The King can do no wrong.
    The King reigns but does not rule.

 

Magna Carta

 

  • Magna Carta (ম্যাগনা কার্টা) : ম্যাগনা কার্টা ল্যাটিন শব্দ। এর অর্থ মহাসনদ। ১২১৫ সালের ১৫ জুন ইংল্যান্ডের রাজা জন সামন্তবাদদের চাপে পড়ে রাজার অধিকার সংক্রান্ত এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এটি প্রজাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও রাজার ক্ষমতা হ্রাসের একটি প্রামাণিক দলিল। ম্যাগনাকার্টাকে সাংবিধানিক শাসনতন্ত্রের সূচনা বলা হয়। এটি ইংল্যান্ডের প্রথম শাসনতন্ত্র।
    যদিও বলা হয়ে থাকে যে, ম্যাগনা কার্টা জনগণের অধিকারের মহাসনদ কিন্তু এ সনদ মূলত ছিল ভূম্যধিকারী ও পাদ্রীদের স্বার্থরক্ষার দলিল। তা সত্ত্বেও ম্যাগনা কার্টা ব্রিটেনের সংবিধানের অগ্রগতিতে একটি বৃহৎ পদক্ষেপ। এই সনদেই লেখা থাকে- Nobody, not even the king, was above the law of the land.
  • Petition of Right : ১৬২৮ সালে স্টুয়ার্ট রাজাদের স্বৈরাচারী শাসনের প্রতিবাদ করে পার্লামেন্ট সদস্যরা একযোগে রাজা প্রথম চার্লসের নিকট পিটিশন অব রাইটস পেশ করে। পিটিশন অব রাইটসের দফাগুলো নিম্নরূপ-
    ১. পার্লামেন্টের অনুমতি ব্যতীত কোনো কর আরোপ করা যাবে না।
    ২. আদালতের নির্দেশ ব্যতীত কাউকে বন্দি করা যাবে না।
    ৩. সৈন্যরা সাধারণ নাগরিকের বাড়িতে থাকতে পারবে না।
    ৪. শান্তিকালীন পরিস্থিতিতে কোনো সামরিক আইন জারি করা যাবে না।
    কিন্তু রাজা চার্লস এগুলো না মানায় ১৬৪৯ সালে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে। অলিভার ক্রমওয়েলের নেতৃত্বে ধনিক-বণিক শ্রেণি ক্ষমতা দখল করে ও প্রথম চার্লসকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
  • Glorious Revolution/ Bloodless Revolution (গৌরবময় বিপ্লব) : রাজা দ্বিতীয় চার্লস পার্লামেন্টের প্রাধান্য স্বীকার করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলেও পরবর্তীতে পার্লামেন্টের সাথে বিরোধ দেখা দেয়। রাজা দ্বিতীয় জেমস ১৬৮৫ সালে ইংল্যান্ডের ক্ষমতায় আসেন।
    তখন ইংল্যান্ডে একদিকে ক্যাথলিক-প্রোটেস্টেন্ট বিরোধ অন্যদিকে রাজা-পার্লামেন্ট বিরোধ চলছিল। রাজা জেমস ছিলেন ক্যাথলিক খ্রিস্টান কিন্তু তাঁর কন্যা মেরি ছিলেন প্রোটেস্টেন্ট খ্রিস্টান। রাজা জেমস প্রশাসনিক কাজে ক্যাথলিকদের প্রাধান্য দিতে থাকেন। এছাড়াও তিনি চিরশত্রু ফ্রান্সের সাথে সম্পর্ক উন্নতিতে মনোনিবেশ করেন যা ইংল্যান্ডের জনগণ মেনে নিতে পারেনি। রাজা জেমস ১৬৮৭ সালে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন এবং নতুন করে পার্লামেন্ট গঠনের চেষ্টা করেন যেখানে ক্যাথলিক প্রাধান্য ও পার্লামেন্ট মেম্বারদের ক্ষমতা হ্রাসের পরিকল্পনা করা হয়। এ সকল কারণে রাজা ও পার্লামেন্টের মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দেয়। ১৬৮৮ সালে যুদ্ধ ছাড়া রক্তপাতহীন পদ্ধতির মাধ্যমে এ বিরোধের অবসান ঘটে বলে একে গৌরবময় বিপ্লব বলা হয়। রাজা দ্বিতীয় জেমস দেশ থেকে বিতাড়িত হন এবং স্টুয়ার্ট রাজবংশের পতন ঘটে। ১৬৮৯ সালে উইলিয়াম মেরি ইংল্যান্ডের সিংহাসনে আরোহণ করেন।
  • Bill of Rights: ১৬৮৯ সালে ইংল্যান্ডের সংবিধানের বিল অব রাইটস অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এ বিল গৃহীত হওয়ায় আইন সংক্রান্ত বিষয়ে পার্লামেন্টের প্রাধান্য স্বীকৃত হয় এবং রাজার চরম ক্ষমতার অবসান ঘটে। ইংল্যান্ডে সার্বভৌমত্ব ও আইনের শাসনের নীতি লিখিতভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। উইলিয়াম ও মেরি বিল অব রাইটস অনুমোদন করেন। তখন থেকেই ইংল্যান্ডে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৭০১ সালে Act of Settlement প্রণয়ন করা হয় যার দ্বারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত করা হয়।

 

Bill of Rights

**Bill of Rights এর সাথে ইংল্যান্ড ও আমেরিকা জড়িত।
ক. ১৬৮৯ সালে স্বাক্ষরিত বৃটেনের নাগরিকদের জন্য মানবাধিকার
সম্পর্কিত আইনগুলোকে একসাথে Bill of Rights বলা হয়।
খ. আমেরিকার সংবিধানে নাগরিক অধিকার সম্পর্কিত প্রথম
১০টি সংশোধনীকে একত্রে Bill of Rights বলা হয়।

আরও জানুন: দেশের পূর্বনাম ও উপনাম

 

  • বৃটেনের খ্যাতনামা বিভিন্ন ব্যক্তির উপাধি-
    আলফ্রেড দ্য গ্রেট : আইনের শাসক।
    জিওফ্রে চসার : ইংরেজি কবিতার জনক।
    রজার বেকন : আধুনিক বিজ্ঞানের জনক।
    মার্গারেট থ্যাচার : লৌহ মানবী।
    Arthur Wellesley : ডিউক অব ওয়েলিংটন। 
  • ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী-
    প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন : হেনরি আইসকুথ, ডেভিড জর্জ।
    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন : উইন্সটন চার্চিল।
    প্রথম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী : রবার্ট ওয়ালপোল (১৭৩০-১৭৪২)।

ব্রিটিশ রানির প্রশাসনিক ভবন : Buckingham Palace.
ব্রিটিশ রানির অফিসিয়াল বাসভবন : Windsor Castle.

  • ব্রিটিশ সরকারের কার্যালয় : Whitehall. 
  • ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভবনের নাম : ওয়েস্ট মিনিস্টার প্রাসাদ (টেমস নদীর তীরে)।
  • ব্রিটিশ সংসদ ভবনের উত্তরাংশের ক্লক টাওয়ারে অবস্থিত সুবিশাল ঘণ্টার নাম : Big Ben.
  • ইউনেস্কো যে শহরকে সিটি অব ফিল্ম ঘোষণা করেছে : ব্র্যাডফোর্ড শহর, যুক্তরাজ্য।
  • যুক্তরাজ্যে নারীরা ভোটাধিকার পায় : ১৯১৮ সালে (৩০ বছর ঊর্ধ্বে) (Representation of the people Act, 1918)।
  • জার্মানির যে রাজা ইংল্যান্ডের সিংহাসনে বসেছিলেন : প্রথম জর্জ (১৭১৪-২৭)।
  • ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অধিবেশন আহ্বান করেন : রাজা/ রানি।
  • ব্রিটেন আইন করে দাসপ্রথা নিষিদ্ধ করা হয় : ১৮৩৩ সালে।
  • রানি প্রথম এলিজাবেথ : টিউডর বংশের।
  • বৃটেনের রাজনৈতিক দলের প্রথম মহিলা প্রধান : মার্গারেট থ্যাচার (লৌহমানবী)।
    ফকল্যান্ড যুদ্ধে জয়লাভ করায় তাঁকে লৌহমানবী বলা হয়।
  • এইডস বিষয়ক সচেতনতা, ভূমি মাইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিখ্যাত হয়ে আছেন : প্রিন্সেস ডায়ানা।
  • ব্রিটিশ রাজবধূ প্রিন্সেস ডায়ানা যে সুড়ঙ্গপথে দুর্ঘটনার শিকার হন : আলমা ডি ট্যানেল (ফ্রান্স)।
  • আয়ারল্যান্ডের স্বাধীনতা : স্কটল্যান্ডের রাজা ষষ্ঠ জেমস পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের রাজা হিসেবে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। মূলত তিনি আয়ারল্যান্ডের রাজা ছিলেন। ১৫৪১ সালে আয়ারল্যান্ড ইংল্যান্ডের একটি নির্ভরশীল রাজ্যে পরিণত হয়। ১৫৪২ সালে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী একটি আইন পাশ করে। এই আইন অনুযায়ী, তখন থেকে ইংল্যান্ডের রাজাই হবেন আয়ারল্যান্ডের রাজা।
    এই নিয়মানুযায়ী আয়ারল্যান্ডের প্রথম রাজা ছিলেন রানি প্রথম এলিজাবেথ ও সর্বশেষ রাজা ছিলেন তৃতীয় জর্জ। ১৮০১ সালে জর্জ গ্রেট ব্রিটেনের সাথে আয়ারল্যান্ডকে একীভূত করে যুক্তরাজ্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যদিও তা বেশিদিন স্থায়ী হয় নি।
    ১৯১৯-১৯২১ সাল পর্যন্ত আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পরিচালনা করে যা আইরিশ যুদ্ধ নামে পরিচিত। শেষ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ড বিভক্তির মাধ্যমে আইরিশ যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। সমগ্র আয়ারল্যান্ডের মোট ৩২টি কাউন্টির মধ্যে ২৬টি কাউন্টি নিয়ে স্বাধীন দক্ষিণ আয়ারল্যান্ড গঠিত। বাকি ৬টি কাউন্টি নিয়ে উত্তর আয়ারল্যান্ড গঠিত যা যুক্তরাজ্যের অন্তর্ভূক্ত। দক্ষিণ আয়ারল্যান্ডের রাজধানীর নাম ডাবলিন। ১৯২১ সালে অ্যাংলো-আইরিশ চুক্তির মাধ্যমে স্বাধীন আয়ারল্যান্ড আত্মপ্রকাশ করে।
  • ১৮৪৫-১৮৫১ সালে আয়ারল্যান্ডে ভয়াবহ আলু দুর্ভিক্ষ হয়। যেখানে প্রায় ১০ লক্ষ আইরিশ নাগরিক মারা যান।
  • আয়ারল্যান্ডে শান্তির জন্য উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে গুড ফ্রাইডে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় : ১০ এপ্রিল, ১৯৯৮।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart

You cannot copy content of this page

Scroll to Top