চীনের রাজনৈতিক ইতিহাস- History of China

চীনের রাজনৈতিক ইতিহাস

  • চীন আয়তনে এশিয়া মহাদেশের এক-পঞ্চমাংশ।
  • চীনে ৫৬টি জাতি রয়েছে। তবে দেশটির ৯৩% লোক হান জাতির।
  • চীনের ইতিহাস : ষোড়শ-ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত অন্যান্য দেশের সাথে চীনের বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। চীনে সব ধরনের পণ্য উৎপাদিত হওয়ায় চীন ইউরোপীয়ান দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক তৈরিতে আগ্রহী ছিল না। তবে চীনের কিছু পণ্য ইউরোপের বাজারে চাহিদা থাকায় ইউরোপীয় দেশগুলো চীনের সাথে বাণিজ্যে আগ্রহী ছিল। একমাত্র ক্যান্টন বন্দরের মাধ্যমে চীনের সাথে বৈদেশিক একপাক্ষিক ব্যবসা চালু ছিল।
  • ক্যান্টন বাণিজ্য প্রথা : ১৫১৭ সালে পর্তুগিজ বণিকরা প্রথমে ক্যান্টন বন্দরে উপস্থিত হয়। কয়েক বছরের মধ্যেই তারা চীন সরকারের বিনা অনুমতিতে ম্যাকাও অঞ্চলে একটি উপনিবেশ স্থাপন করে। পর্তুগিজরা ক্যান্টনে একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকারী হতে চেয়েছিল কিন্তু অল্পদিনেই ক্যান্টন বন্দরে ইংরেজ, ফরাসি ও ওলন্দাজরা আসতে থাকে। ১৭৫৯ সালে জেমস ফ্লিন্ট নামে এক ইংরেজ বণিক আবগারি প্রথা অমান্য করে নিংপোতে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাকে বাধা দেওয়া হয়। তখন তিনি তিয়েন্তসিনে ক্যান্টন কর্তৃপক্ষের দুর্নীতির বিরুদ্ধে নালিশ করতে যার। এর ফলে তাকে ম্যাকাওতে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তখন আদালত আদেশ জারি করে যে, এখন থেকে কেবল ক্যান্টন বন্দরই বিদেশি বণিকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অন্য সব বন্দরে বিদেশিদের বাণিজ্য নিষিদ্ধ করা হয়।
    ক্যান্টন বাণিজ্য প্রথার নিয়ম শিথিল ও চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ইংরেজ সম্রাট ১৭৯২ সালে লর্ড ম্যাকার্টনিকে চীনে পাঠায়। কিন্তু চীনা সম্রাট চিয়েন লুং এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন। ইংরেজরা ১৮১৬ সালে চীনের সাথে স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
  • ক্যান্টন বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য
    ক. এক বন্দর কেন্দ্রিক বাণিজ্য : এই বন্দর ছাড়া কোথায় বিদেশিদের পণ্য ক্রয় করার সুযোগ ছিল না।
    খ. একতরফা বাণিজ্য : চীন শুধু পণ্য বিক্রি করত। তারা বিদেশিদের থেকে কিছু কিনত না। এছাড়াও চীন তখন বিদেশিদের ঘৃণার চোখে দেখত।
    গ. পরোক্ষ বাণিজ্য : বিদেশি বণিকগণ সরাসরি পণ্য ক্রয় করতে পারত না। বরং হং ব্যবসায়ীদের সংগঠন COHONG এই বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করত।
    ঘ. COHONG সমবায়ের অস্তিত্ব : ১৩টি বণিক সংস্থা মিলে এই সংগঠন গঠিত হয়। পণ্যের দাম নির্ধারণে কোহংদের প্রচুর ক্ষমতা ছিল। এছাড়াও ক্যান্টনের আবগারি কর্তাকে বলা হত Hoppo। এই হপ্পোরা অত্যন্ত দুর্নীতিপরায়ণ ছিল এবং প্রায়ই হং বণিকদের থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘুষ গ্রহণ করত।
    ঙ. বিদেশি বণিকদের থেকে চড়া শুল্ক আদায় করা হত।
    চ. পণ্যের দাম নির্ধারণে পাশ্চাত্য বণিকদের কোনো ভূমিকাই ছিল না।
    ছ. বণিকদের উপর কঠোর শর্তারোপ (বণিকদের কখনো ক্যান্টন শহরে প্রবেশ করতে দেয়া হত না, চীনে বসবাস করতে চাইলে ম্যাকাওতে যেতে হবে, চীনা ভাষা শিখতে পারবে না, চীনা আইনে বিদেশিদের বিচার) করা হয়েছিল।
  • ক্যান্টন বাণিজ্যে চা ব্যবসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে চা ইউরোপের দেশগুলোতে জাতীয় পানীয়তে পরিণত হয়েছিল। ফলে চায়ের চাহিদা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায়। ইংল্যান্ডে রপ্তানিকৃত পণ্যের শতকরা ৯০% ছিল চা।
  • বিদেশিরা মনে করত যে, পাশ্চাত্য দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক স্থাপনে চীন রুদ্ধদ্বার নীতি (Closed Door Policy) গ্রহণ করেছে। কিন্তু চীনের আমলাতন্ত্র মনে করত রুদ্ধদ্বার নীতি নয়, বিদেশি বণিকদের প্রতিপত্তি চীনে যেন বৃদ্ধি না পায়, সেজন্য তাদের উপর এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ করা (Control) হত।

[the_ad id=”15442″]

 

  • প্রথম আফিম যুদ্ধের সূচনা-

     

  • চীনে আফিমের প্রবেশ : সপ্তম-অষ্টম শতাব্দীতে আবর-তুর্কি বণিকরা চীনে আফিমের প্রচলন করে। তবে চীনারা আফিম ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করত। ঊনবিংশ শতাব্দীতে চীনে আফিম ব্যবহার প্রচুর পরিমাণে বেড়ে যায়। ফলে ইউরোপীয় বণিকরা যথাসাধ্য চীনের সাথে বাণিজ্যিক ভারসাম্য তৈরি করতে চেষ্টা করছিল। ব্রিটিশসহ অন্যান্য পাশ্চাত্য বণিকরা রূপার মাধ্যমে তার দাম মেটাত। এভাবে চীনের নিকট প্রচুর পরিমাণে রূপা সঞ্চিত হয়। কিন্তু চীন কোনোভাবেই পশ্চিমা পণ্য ক্রয় করতে আগ্রহী ছিল না। কারণ চীনে সব ধরনের পণ্যই উৎপাদিত হত।

    এক সময় ব্রিটিশ ও আমেরিকান বণিকরা নিজেদের লাভের মাত্রা বাড়ানোর জন্য এক অভিনব উপায় বের করল। তারা চীনের অভ্যন্তরে আফিম চোরাচালান করতে লাগল। ১৭৮০ সালে ব্রিটিশরা চীনে আফিম চোরাচালান শুরু করে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতবর্ষ থেকে ও আমেরিকান বণিকরা তুরস্ক থেকে অতি সস্তায় আফিম কিনে চীনে চোরচালান করত। আফিম গ্রহণ করার পরিবর্তে ইংরেজ বণিকরা চা, রেশম ও অন্যান্য পণ্যসামগ্রী দিতে লাগল। কিন্তু আফিমের চাহিদা এত বেড়ে যায় যে, এই সব পণ্য দিয়েও বাণিজ্যিক ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হল না। তখন চীনারা রূপার মাধ্যমে আফিম ক্রয় করতে লাগল। যার ফলে চীনের রূপা খুব দ্রুতই বিদেশে চলে যেতে লাগল।

    কিছুদিনের মধ্যেই মাঞ্চু সরকার বেআইনি আফিম ব্যবসার কুফল উপলব্ধি করতে পারে। ১৮০০ সালে চীনে অবৈধভাবে আফিম ব্যবসা নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু ততদিনে চীনারা আফিমে আসক্ত হয়ে পড়ে ও বড় বড় রাজকর্মচারীরাও এর সাথে জড়িয়ে পড়ে। দেখা গেল, আফিম ব্যবসা নিষিদ্ধ করায় আফিমের চাহিদা আরও বেড়ে যায়। এর ফলে চীনের যুবসমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গেল। চীনের অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে পড়ছিল। চীন সম্রাটের অনেক পরিকল্পনার পরেও যখন অবৈধ আফিম ব্যবসা বন্ধ করা যায়নি ও ব্রিটিশদের দৌরাত্ম্য দিনে দিনে বাড়ছিল- তখন ১৮৪০ সালে প্রথম আফিম যুদ্ধের সূচনা ঘটে।
    যুদ্ধে চীন পরাস্ত হয় এবং ১৮৪২ সালে নানকিং সন্ধির মাধ্যমে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। সন্ধি অনুসারে চীন হংকং বন্দর ইংল্যান্ডকে ছেড়ে দেয় ও অপর ৫টি বন্দরে ইউরোপীয় বণিকদের অবাধ বাণিজ্যাধিকার প্রদান করে। মূলত চীনা সাম্রাজ্যের সাথে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করাই ছিল এই যুদ্ধের উদ্দেশ্য।
    প্রথম আফিম যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স চীনের থেকে সুবিধা আদায় করে নেয়। এত কিছুর পরও বিদেশিদের ক্যান্টন শহর প্রবেশে বাধা থাকে। অন্যদিকে ৬টি বন্দর উন্মুক্ত করে দেয়ার পরও বিদেশিদের লালসা আরো বেড়ে যায়। তারা সমগ্র চীনে ব্যবসা করার অনুমতি চায়। ১৮৫৬ সালে বৃটেন-যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স নানকিং চুক্তি সংশোধনের দাবি জানায়। কিন্তু চীনারা কোনোমতেই এই দাবি মেনে নিতে রাজি হয়নি। ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে তিক্ত সম্পর্ক সৃষ্টি হয়।

[the_ad id=”15463″]

  • দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধের সূচনা-
    দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধের প্রেক্ষাপট :
    ক. ১৮৫৬ সালের অক্টোবরে এক জলদস্যুকে গ্রেপ্তারের জন্য ৪ জন চীনা অফিসার ও ৬০ জন সেনা ‘অ্যারো’ নামক একটি জাহাজে অভিযান পরিচালনা করে। জাহাজটি ব্রিটিশ কোম্পানির রেজিস্ট্রিকৃত ছিল। তাই ঘটনাটি যখন ঘটে তখন জাহাজটিতে ব্রিটিশ পতাকা উড্ডীন ছিল। অভিযান পরিচালনার সময় ধস্তাধস্তিতে ব্রিটিশ পতাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তৎকালীন ব্রিটিশ কনসাল হ্যারি পার্কস এর তীব্র প্রতিবাদ করে ও ক্যান্টনের গভর্নর ইয়েহ মিং চেনের লিখিত ক্ষমা-প্রার্থনা দাবি করে। কিন্তু ইয়েহ এই দাবি অস্বীকার করে।
    খ. ইতোমধ্যে ১৮৫৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোয়াংশি প্রদেশে চীনা কর্তৃপক্ষ Chapde Laine নামে জনৈক ফরাসি ক্যাথলিক মিশনারিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এই দুটো তুচ্ছ ঘটনাকে উপকরণ বানিয়ে ফ্রান্স-বৃটেন চীনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর হয়।
    ১৮৫৬ সালে ব্রিটেন-ফ্রান্স যৌথভাবে চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। চীন পরাজিত হয় এবং সম্রাট তিয়েন সিয়েন সন্ধি চুক্তি করতে বাধ্য হয়। চুক্তিতে চীন ব্রিটেনকে ৪ মিলিয়ন টেইল ও ফ্রান্সকে ২ মিলিয়ন টেইল ক্ষতিপূরণ দেয় ও নতুন করে আরো ১০টি বন্দর বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বিদেশিরা চীনের সর্বত্র ভ্রমণের অধিকার লাভ করে। এছাড়াও চীনা কর্তৃপক্ষ আমদানিকৃত পণ্যের উপর ২.৫% এর বেশি অভ্যন্তরীণ শুল্ক আরোপ করতে পারবে না।

    দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধকালীন চীনে তাইপিং বিদ্রোহ (১৮৫০-১৮৬৪) দেখা দেয়। বিদেশিদের উদ্ধত আচরণ, অর্থনৈতিক শোষণ ও খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের আচরণের প্রতিবাদে ১৯০০ সালে বক্সার বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। বিদ্রোহটি ব্যর্থ হয় এবং বিদেশিদের প্রভুত্ব আরো বেড়ে যায়। {সূত্র : চীন ও জাপানের ইতিহাস, সিদ্ধার্থ গুহ রায়}১৮৯৪-৯৫ সালে কোরিয়া নিয়ে চীন-জাপান যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে চীনের পরাজয় ঘটলে চীনের জনসাধারণের মাঝে রাজতন্ত্র বিরোধী চেতনা জাগে এবং সংস্কারের পক্ষে দাবি শক্তিশালী হয়। পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা সঞ্চারিত হয়।
    বুদ্ধিজীবীদের একাংশ ঔপনিবেশিক শক্তি উচ্ছেদের দাবি জানাতে থাকে। তাদের নেতা ছিল ডা. সুন চোং শান (সান ইয়াৎ সেন)। তিনি সংস্কার আন্দোলনের পরিবর্তে বৈপ্লবিক পদ্ধতির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। ১৯০৫ সালে বিপ্লবীদের নিয়ে টোকিও শহরে গঠন করা হয় Zhongguo Tongmenghui বা চীনা বিপ্লবী সংঘ। সান ইয়াৎ সেনের নীতি ছিল তিনটি। যথা- জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও জনগণের জীবিকা। মূলত বিপ্লবীদের উদ্দেশ্য ছিলো মাঞ্চু রাজবংশের পতন।
    বিপ্লবীরা ১৯১২ সালের জানুয়ারিতে নানচ্যাং দখল করে ও সান ইয়াৎ সেনকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি মাঞ্চু রাজবংশ রক্ষার জন্য কিছু সাংবিধানিক সংস্কার করেন ও ইউয়ান সি খাই (Yuan Shikai) নামের একজন সেনাপতির হাতে ক্ষমতা অর্পণ করে। এভাবেই চীন বিভক্ত হয়ে যায়। দক্ষিণে সান ইয়াৎ সেন ও উত্তরে ইউয়ান সি খাই এর কর্তৃত্ব বজায় থাকে। ১৯১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সমোঝতার মাধ্যমে সম্রাট স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ত্যাগ করে। সান ইয়াৎ সেন তার দলের নাম রাখেন Kuomintang। এভাবেই চীনে ৩০০ বছরের কিং রাজতন্ত্রের (Qing Dynasty) অবসান ঘটে।
  • চীনে কমিউনিস্ট আন্দোলন : ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় প্রথম সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। পার্শ্ববর্তী দেশ চীনেও এর প্রভাব পড়ে। ১৯২১ সালে চীনে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিউনিস্ট পার্টির জন্মলাভ করে। ১৯২৩ সালে কমিউনিস্ট পার্টি কুয়োমিংতাং পার্টির সাথে ঐক্যফ্রন্ট করার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯২৫ সালে সান ইয়াৎ সেন মারা গেলে চিয়াং কাইশেক কুয়োমিংতাং পার্টির নেতৃত্ব লাভ করেন।
    বিদেশি হস্তক্ষেপ ও শ্রমিক গ্রেফতারের প্রতিবাদে সাংহাইয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে। এতে ব্রিটিশ পুলিশদের গুলিতে অনেকেই আহত হয়। এর বিরুদ্ধে কমিউনিস্ট পার্টি ও কুয়োমিংতাং এর নেতৃত্বে ‘ব্রিটিশ ও জাপানি পণ্য বর্জন’ কর্মসূচি পালিত হয়। রীতিমত বিক্ষোভ ও ধর্মঘটের কারণে হংকংয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।

    চিয়াং কাইশেক ১৯২৬ সালের জুলাই মাসে উত্তরাঞ্চলে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে ও সেখানকার সমরনায়কদের হত্যা করে। ফলে কমিউনিস্ট পার্টির সাথে কুয়োমিংতাং পার্টির দূরত্ব বৃদ্ধি পায়। কমিউনিস্ট পার্টির জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে চিয়াং কাইশেক কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ও বহু কমিউনিস্ট হত্যা করে। এরই প্রেক্ষিতে মাও জে দং কমিউনিস্ট পার্টিকে সুসংহত করার লক্ষ্যে চাইনিজ রেড আর্মিকে আরো শক্তিশালী করেন।
    ১৯৩৪ সালে চিয়াংসি প্রদেশে চিয়াং কাইশেকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কমিউনিস্ট পার্টি পরাজিত হলে মাও জে দংকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব থেকে অপসারণ করা হয় এবং মাও-এর গেরিলা যুদ্ধের কৌশল পরিহার করে সম্মুখযুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হয়ে মাও-এর নীতিই অনুসরণ করা হয়। ১৯৩৫ সালে পুনরায় মাওকে কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। এরই মধ্যে ১৯৩১ সালে জাপান মাঞ্চুরিয়া দখল করে। চিয়াং কাইশেক এলাকাটি মুক্ত করার জন্য কিছুদিন কমিউনিস্ট বিরোধী অভিযান বন্ধ রাখে।

[the_ad id=”15456″]
১৯৩৬ সালে চিয়াং কাইশেকের সাথে কমিউনিস্টদের দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। মাও জে দং জাপানি আগ্রাসনকে প্রতিহত করার জন্য সহযোগিতা করার আবেদন করলেও চিয়াং কাইশেক এতে সাড়া দেয়নি। তিনি জিয়ান থেকে কমিউনিস্ট বিতাড়নের পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু কাইশেকের বাহিনীর অধিকাংশ ছিল মাঞ্চুরিয়ার অধিবাসী। তারা আত্মকলহ বাড়ানোর পরিবর্তে জাপানিদের বিতাড়ন সঙ্গত মনে করেন। এমন পরিস্থিতিতে চিয়াং কাইশেক নিজ সেনাবাহিনীর হাতে আটক হন। তবে চৌ এন লাই এর মধ্যস্থতায় তিনি মুক্ত হন।
১৯৩৭-৪৫ সাল পর্যন্ত মাও জে দং তাঁর লালফৌজ নিয়ে জাপানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। ১৯৪৫ সালে জাপান আত্মসমর্পণ করে। কমিউনিস্টরা চীনের অনেক অঞ্চলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কাঠামো নিয়ে কমিউনিস্ট পার্টি ও কুয়োমিংতাং (জাতীয়তাবাদী) দলের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। ১৯৪৫-৪৭ সাল পর্যন্ত চীনে গৃহযুদ্ধ চলে। মাও জে দং গ্রামাঞ্চল নিয়ে শহর ঘেরাও করার নীতি প্রয়োগ করেন। এভাবে কমিউনিস্ট পার্টির সংঘবদ্ধ আক্রমণে জাতীয়তাবাদী দল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়।
১৯৪৯ সালে চীনের মূল ভূখণ্ডে মাও জে দং এর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়। চিয়াং কাইশেক রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। চিয়াং কাইশেক সমগ্র চীনকে ভাগাভাগি করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টি তা প্রত্যাখ্যান করে। চিয়াং কাইশেক তাঁর বাহিনী নিয়ে ক্যান্টনে আশ্রয় নেন ও মার্কিন সহযোগিতায় ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বরে তাইওয়ানে স্থায়ীভাবে আশ্রয়গ্রহণ করেন। মাও জে দং ১৯৪৯ সালের ১ অক্টোবর People’s Republic of China ঘোষণা করেন এবং তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের চেয়ারম্যান পদ গ্রহণ করেন।

  • প্রশাসনিক বিভাগ : গণচীনের শাসনের আওতায় ২৩টি প্রদেশ, পাঁচটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, চারটি কেন্দ্রশাসিত পৌরসভা (বেইজিং, তেইজিন, সাংহাই, ছুংগিং) এবং দুটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল (হংকং ও ম্যাকাও) রয়েছে।
  • আইনসভা : কংগ্রেস। আইনসভা ভবনের নাম Great Hall of the people.
    তবে চীনের আইনগত ক্ষমতা সংসদের বাইরেও Standing Committee of the National Congress (NPCSC) এর হাতে রয়েছে।
  • চীনের রাজাদের বলা হত : Son of God.
  • চীনের প্রভাবশালী দার্শনিক : কনফুসিয়াস।
  • চীনের আলোচিত মেগা প্রজেক্ট : Belt and Road Initiative (BRI). 
  • চীনের অর্থনীতির বৃহৎ তিনটি খাত : সেবাখাত, শিল্পখাত ও কৃষিখাত।

  • তিয়েন আনমেন স্কয়ার : ১৯৮৯ সালের ৪ জুন বেইজিং এর তিয়েন আনমেন স্কয়ারে ছাত্র-বুদ্ধিজীবীরা গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে সমবেত হয়। চীনা সরকার এই সমাবেশে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়।
  • কুওমিন্টাং (Kuomintang) : চীনের জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দলের নাম। সান ইয়াৎ সেন ও লিও চংজেঙের নেতৃত্বে ১৯১৯ সালের ১০ অক্টোবর দলটি গঠিত হয়। ১৯৪৯ সাল থেকে এই দলটি তাইওয়ানে কার্যক্রম চালাচ্ছে।
  • তাইওয়ান : ১৯১২ সালে চীনা বিপ্লবের মাধ্যমে তাইওয়ান গঠিত হয়। তাইওয়ান ফরমোজা প্রণালি দ্বারা চীন ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। সপ্তদশ শতাব্দীতে চীনারা তাইওয়ানে বসতি স্থাপন করতে শুরু করে। ১৮৯৫-১৯৪৫ সাল পর্যন্ত তাইওয়ান জাপানের শাসনাধীনে ছিল এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর চীনের অধীন চলে আসে। ১৯৪৯ সালে চীনে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সময় ক্ষমতাচ্যূত শাসক চিয়াংকাইশেক তাইওয়ানে আশ্রয় নেয় ও তাইওয়ানকে রিপাবলিক অব চায়না বলে ঘোষণা করেন। এভাবে চীনের ভেতর আরেকটি জাতীয়তাবাদী দেশ গঠিত হয়। ১৯৭১ সালে তাইওয়ান চীনের নিকট স্বাধীনতা হারায়।

 

  • Ping Pong Diplomacy : টেবিল টেনিস খেলার অপর নাম Ping Pong.
    ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ-৭ এপ্রিল পর্যন্ত জাপানের নাগোয়াতে বিশ্ব টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা (৩১ তম) অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল চীন সরকারের নিমন্ত্রণে আমেরিকার টেবিল টেনিস টিম এক সপ্তাহের জন্য গণচীনে যায়।
  • ঘটনার সূত্রপাত : জাপানে বিশ্ব টেবিল টেনিস চলাকালে ১৯ বছর বয়সী আমেরিকান প্লেয়ার গ্লেন কোয়ান লালশার্ট পরিহিত চীনা জাতীয় টিম পরিবহনকারি বাসে লাফিয়ে উঠে পড়ে। তখন বেশিরভাগ চীনা প্লেয়ারই আমেরিকানদের সন্দেহের চোখে দেখত। কিন্তু চীনের বিখ্যাত প্লেয়ার Zhuang Zedong আগ বাড়িয়ে কাউনের সাথে হ্যান্ডশেক করে ও হুয়াংশান পর্বতের একটি ছবি উপহার দেয়।
    এতে আমেরিকান প্লেয়ার গ্লেন কোয়ান খুব খুশি হয় এবং জুহাংকে একটি টিশার্ট উপহার দেয়। যাতে শান্তির প্রতীক ও বিটলস ব্যান্ডের এই গানের লিরিক্স লেখা ছিল- Let it Be. তখনকার ফটোগ্রাফাররা বিষয়টি ফ্রেমবদ্ধ করেন এবং দুই দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে এমন সৌজন্যবোধ থেকে বিস্মিত হন। টুর্নামেন্টে এটিই ছিল সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।
    টুর্নামেন্টের শেষের দিকে বিশ্ববাসীকে অবাক করে চীনের প্রেসিডেন্ট মাও জে দং আমেরিকান দলকে চীনে নিমন্ত্রণ করেন। মাও জে দং মনে করেন, জুহাং কেবল একজন প্লেয়ারই নয়, সে একজন দক্ষ কূটনীতিবিদের কাজও করেছে। মার্কিন খেলোয়াড়রা চীনে ভ্রমণ করলে চীন তাদের যথাসাধ্য আতিথেয়তা প্রদর্শন করে। এই সফরে উভয় দল চীনের মহাপ্রাচীরের নিকট একটি টেবিল টেনিস গেম খেলে যার শ্লোগান ছিল- Friendship First and Competition Second. তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেন, “চীনের এই উদ্যোগ এতটা কার্যকর হবে আমি ভাবতেও পারি নি।”
    ১৪ এপ্রিল ১৯৭১, মার্কিন দল চীনের প্রধামন্ত্রী Zhou Enlai এর সাথে সাক্ষাৎ করেন। একই দিনে প্রেসিডেন্ট নিক্সন ঘোষণা দেন যে আমেরিকা চীন ভ্রমণ ও চীনের উপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করবে। এভাবেই চীন-আমেরিকা সম্পর্ক উন্নতি হয়। ১৯৭১ সালের জুলাইতে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার চীনে ভ্রমণ করেন। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম আমেরিকান প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিক্সন চীনে সফর করেন।
  • তিব্বত {রাজধানী : লাসা} : ১৯১২ সালে ত্রয়োদশ দালাইলামা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত গণচীনের একটি স্বাশাসিত অঞ্চল তিব্বত। বর্তমানে এটি চীনের অধীন। ১৯৫০ সালে চীন তিব্বত দখল করলে ১৯৫৯ সালে চতুর্দশ দালাইলামা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান ও নির্বাসিত তিব্বত সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। দালালইলামা অর্থ বিশাল সাগর। চীন তিব্বত সরকারকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
    তিব্বতের বর্তমান দালাইলামার নাম : তেনজিন গিয়াৎসু।
    বিখ্যাত পোতালা প্রাসাদ (Potala Palace) অবস্থিত : লাসা, তিব্বত।
    দালাইলামা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান : ১৯৮৯ সালে।
  • তিব্বতকে নিষিদ্ধ দেশ বলা হয় : হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত হওয়ায় বছরে অন্তত ৮ মাস তুষার ঢাকা থাকে। বিশ্বের সর্বোচ্চ মালভূমি আর বরফ গলা নদী নিয়ে জাদুময়ী এক রহস্যরাজ্য তিব্বত। লাসার অদূরেই অবস্থিত গোবি মরুভূমি। এই মরুভূমির কষ্টকর পরিবেশ মানুষকে কাছে যেতে নিরুৎসাহী করে। এই দুর্গম পরিবেশ, বহির্বিশ্বের মানুষের প্রবেশাধিকার না থাকা, লামাদের কঠোরতা ইত্যাদি কারণে তিব্বতকে নিষিদ্ধ দেশ বলা হয়।
  • ম্যাকাও : বর্তমানে এটি চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। গোয়া ও মালাক্কাতে বাণিজ্য করার পর ১৫১৩ সালে পর্তুগীজরা প্রথম ম্যাকাওতে আসে। ১৫৫৭ সালে পর্তুগীজরা বেইজিং থেকে ম্যাকাও ইজারা নেয়। প্রায় ৪৪২ বছর এটি পর্তুগালের অধীনে ছিল। ১৯৯৯ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্তুগাল এটি চীনকে ফেরত দেয়।**প্রেক্ষাপট : পর্তুগীজ শাসনামলে ১৮৪৫ সালে ম্যাকাওকে শুল্কমুক্ত বন্দর হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ম্যাকাও সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত। যে কোনো পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা বা স্বর্ণ নিয়ে ম্যাকাও থেকে বেরিয়ে যাওয়া যায়। এখানে প্রবেশের সময় কোন পণ্যের উপরই শুল্ক লাগে না।

  • চীনের মহাপ্রাচীর : মঙ্গোলিয়ার ডাকাত দলের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য চীন তিন ধাপে উত্তর সীমান্তে এই প্রাচীর নির্মাণ করে। মনুষ্য নির্মিত এটি সর্ববৃহৎ স্থাপনা। খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে এটি নির্মিত হয়।
  • হংকং {রাজধানী : ভিক্টোরিয়া} : হংকং {অর্থ : সুরভিত বন্দর} চীনের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ও এশিয়ার বাণিজ্যিক রাজধানী। পূর্বে এটি ব্রিটিশ উপনিবেশে ছিল। ১৯৯৭ সালের ১লা জুলাই ব্রিটিশ সরকার চীনের নিকট এটি ফেরত দেন। ২০৪৭ সালে সালে হংকংয়ে এক দেশে দুই নীতি বাতিল হবে। বিশ্বে হংকং ফ্রি পোর্ট হিসেবে পরিচিত।
    **প্রেক্ষাপট : ঊনবিংশ শতাব্দীতে চীনে ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের অন্যতম প্রধান রপ্তানি দ্রব্য ছিল গাঁজা। আফিম যুদ্ধে চীন পরাজিত হলে নানকিং চুক্তির মাধ্যমে হংকং ব্রিটেনের দখলে চলে যায়। ১৮৬০ সালে দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধে ব্রিটিশরা ‘কাউলুন’ দখল করে নেয়। চীন সরকার হংকং, কাউলুনসহ বিভিন্ন দ্বীপ ব্রিটিশদের কাছে ইজারা দিতে বাধ্য হয়।
  • ১৯৭৯ সালে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা হ্রাস প্রকল্পে চীন এক সন্তান নীতি গ্রহণ করে। কিন্তু পরে জন্মহার কমে যাওয়ায় চীন এ নীতি থেকে সরে আসে। বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ায় কর্মক্ষেত্রে এর প্রভাব ঠেকাতে জনভারসাম্য রক্ষায় ২০১৬ সালেই চীন সরকার দম্পতিদের দুই সন্তান নেয়ার অনুমতি দেয়। তারপরও চীনে বাড়েনি জন্মহার। ২০১৮ সালে সন্তান জন্মহার ছিল এ যাবৎকালের সর্বনিম্ন।
    সম্প্রতি লিয়াওনিং প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে জনসংখ্যা হ্রাস আটকাতে পরিবার পরিকল্পনা নীতিতে সংশোধন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

  • সুবিক বে নৌঘাঁটি : দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থিত ফিলিপাইনের সুবিক বে নৌঘাঁটিতে মার্কিন সৈন্যের অবস্থান ছিল। কিন্তু ফিলিপাইনের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ফলে ১৯৯২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ঘাঁটি ত্যাগ করে। বর্তমানে চীনের আগ্রাসী নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় ঘাঁটিটি ব্যবহারের অনুমতি চাচ্ছে। তবে ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ সুবিক বে ঘাঁটিটি ‘নৌ ঘাঁটি’ হিসেবে নয়, বন্দর হিসেবে ব্যবহারের জন্য মার্কিন বাহিনীকে প্রস্তাব দিয়েছে।
  • চীনে এক দেশে দুই নীতি চালু আছে : হংকং এর অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখার জন্য।
  • শত ফুল ফুটতে দাও (Hundred Flowers Campaign) নীতির প্রবক্তা : মাও সে তুং। ১৯৫৬ সালে মাও সে তুং এই নীতি অনুসরণ করেন। যার ফলে চীনে বুদ্ধিজীবীরা মুক্তচিন্তা ও মত প্রকাশের সুযোগ পায়।
  • সিস্টার সিটি : দুই দেশের নগরগুলোর ভিতরে চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে সিস্টার সিটিসমূহ গঠন করা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার প্রথম সিস্টার সিটি সৃষ্টির ধারণা দিয়েছিলেন। এই ধারণার মূলকথা হলো সিস্টার সিটিগুলোর নাগরিকদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক এবং কানেক্টিভিটি তৈরি বাড়বে। এটাই প্রকারান্তে দুই দেশের মধ্যে একটি নাগরিক কূটনীতি বা সিটিজেন ডিপ্লোমেসি তৈরি করবে।
    ঐতিহ্যগতভাবে এই ধারণা গভীর হয়েছে যে, সিস্টার সিটি পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধিতে সহায়ক হয় এবং দুই নগরী মনে করে যে তারা মিত্র নগরের নাগরিক।
    চীন এই কূটনীতিতে ক্রমবর্ধমানহারে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে চলছে এবং তা ইতোমধ্যে তাদের পররাষ্ট্রনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। আর এটা শুধু এই অঞ্চলেই নয়, গোটা বিশ্ব জুড়ে তাদের এই পরিকল্পনা এবং সেভাবেই তারা অগ্রসর হচ্ছে। চীনা শহরগুলোর মধ্যে বেইজিংয়ের রয়েছে সবচেয়ে বেশি সিস্টার চুক্তি। {মানবজমিন}
  • ১৯৫০ সালের ১লা আগস্ট জাতিসংঘ চীনের সদস্যপদ খারিজ করে। তবে ১৯৭১ সালের ১৯ নভেম্বর চীন পুনরায় জাতিসংঘের সদস্যপদ পায়। 
  • আরও পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাস

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart

You cannot copy content of this page

Scroll to Top