লালসালু উপন্যাসের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
- মনে হয় যেনো খোদাতায়ালার বিশেষ দেশ- শত অভাব থাকা সত্ত্বেও নোয়াখালী অঞ্চলে ধর্মীয় কাজে কোনো কার্পণ্য না করায় লেখক ব্যঙ্গ করে উক্তিটি করেছেন।
- মজিদের খেলা সাংঘাতিক কেন?– মজিদের ভণ্ডামি যদি ধরা পড়ে যায়, তাই মজিদের এই অন্ধবিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে খেলাকে লেখক ভয়ংকর বলেছেন।
- কুৎসা রটনা বড় গর্হিত কাজ কেন?- কুৎসা মানুষের মান-মর্যাদার হানি করে তাই তা বড় গর্হিত কাজ।
- মজিদ রহিমার প্রতি গুরুগম্ভীর হয়ে পড়ে কেন?- রহিমাকে মজিদ ও মাজারের প্রতি ভয় সঞ্চার করতে মজিদ এমন করে।
- সে ঝংকার মানুষের প্রাণে লাগে, কানে লাগে- উপন্যাসে কোরআনের আয়াত পড়ার ঝঙ্কারের কথা বলা হয়েছে।
- যে জিনিস বোঝার নয়, তার জন্য কৌতূহল প্রকাশ করা অর্থহীন কেন?- আল্লাহর মহিমা সম্পর্কে সবার বোঝা সম্ভব নয় কথাটি বলা হয়েছে।
- তোমার দিলে কি ময়লা নেই- যৌবনে বুড়ি উড়নি মেয়ে ছিল। তার বিরুদ্ধে গ্রামবাসীরা বিভিন্ন অপবাদ দেয়। বুড়ো তখন এই মিথ্যা অভিযোগ বিশ্বাস করে। সেই কথা মনে করিয়ে দিতে মজিদ বুড়োকে এই প্রশ্ন করে।
- আল্লাহর ওপর এত ভরসা থাকা সত্ত্বেও মজিদের চোখে জ্বালাময়ী ছবি ভেসে ওঠে কেন?– ভেতরের পশুবৃত্তি প্রকাশের ক্ষেত্রেই মজিদ বেগুনি শাড়ি পরা অস্পষ্ট নারীর (হাসুনির মা) উপর নজর পড়ে, সেক্ষেত্রে উক্তিটি করা হয়েছে।
- মজিদের মন থম থম করে কেন?- আউয়ালপুরের পীরের আগমনে সে সত্যি সত্যি ভয় পায়।
- মজিদের ক্রোধ হয় কেন?- আউয়ালপুরের পীরের আগমনে তার মাজার ব্যবসার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে গ্রামবাসীর উপর তার ক্রোধ হয়।
- ধলা মিঞা আউয়ালপুরে যেতে চায় না কেন?- আউয়ালপুর ও মহব্বতনগরে মাঝপথে দেবংশি তেঁতুল গাছের ভয় ও পীরের মার খাওয়ার ভয়ে ধলা মিঞা সেখানে যায় না।
- সজ্ঞানে না জানলেও তারা একট্টা, পথ তাদের এক- মহব্বত নগরের দুই শক্তিশালী লোক মজিদ ও খালেক ব্যাপারি সম্পর্কে লেখক কথাটি বলেছেন।
- হাসুনির মার মন বেদনায় নীল হয়ে উঠে কেন?- মজিদের মুখে কবরের আযাবের কথা শুনে হাসুনির মা এমন করে উঠে।
- আমেনা বিবির মনে আশার সঞ্চার হলো কেন?- মাজার প্রদক্ষিণের সময় আমেনা বিবির ভয় হলেও সন্তান প্রাপ্তির আশা তার মনে জাগ্রত হয়।
- ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া- মজিদের মতো কামেল পিরকে রেখে আওয়ালপুরের পীরের পানিপড়া আনতে চাওয়ায় উক্তিটি করা হয়েছে।
- শুধু জীবন্ত হয়ে সেই ডালপালা শাখা-প্রশাখা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে- উক্তিটি দ্বারা আমেনা বিবিকে তালাক দেওয়ার কথা মুখে মুখে জীবন্ত হয়ে প্রচারের কথা বলা হচ্ছে।
- আর একটা সত্যের সীমানায় পৌঁছে, জন্ম বেদনার যন্ত্রণা অনুভব করে মনে মনে- ঝড়-বৃষ্টি শেষে সংজ্ঞাহীন জমিলাকে বিছানায় শুইয়ে দেওয়ার পর মজিদের মনে অনুশোচনায় এই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
- জমিলা বেঁকে বসে কেন?- জমিলা যখন বুঝতে পারে তাকে মজিদ মাজারে নিয়ে যাবে, তখন সে বেঁকে বসে।
- কবরটি মজিদকে ভীত করে তোলে কেন?- মজিদ যে কবরটি দিয়ে দশ-বারো বছর ব্যবসা করছে, সে মানুষকে আসলে সে চিনে না। তাই মাজারের সালু উল্টে গেলে সে ভীত হয়ে পড়ে।
- তাঁর জীবনে সৌখিনতা কিছু যদি থাকে তা এই কয়েকগজ রূপালি চাকচিক্য- উক্ত লাইনে মাজারের প্রতি মজিদের মায়া-মমতা তুলে ধরা হয়েছে।
- ফাল্গুনের দমকা হাওয়া মজিদের মনে ভাব জাগায় কেন?- ফাল্গুনের হাওয়ায় ধুলো উড়তে দেখে মজিদের দেশের কথা, স্বজনের কথা মনে পড়ে।
- ওটা ছিল নিশানা, আনন্দ আর সুখের- উক্ত লাইনে স্বামীর বাড়ি যে আমেনা বিবির জন্য সুখের স্থান ছিল, তা তুলে ধরা হয়েছে।
- এত বড় একটা দোষের কথা দোষিণীর আপন মুখ থেকে শুনেও চুপ করে আছে- মজিদ বুড়োর বিচার করার পর বুড়োর সহনশীলতা ও অক্ষমতার দিকটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
- বার্ধক্যের শেষ স্তরে কারো মৃত্যু ঘটলে দুঃখটা তেমন জোরালোভাবে বুকে লাগে না- উক্তিটিতে শিশু ও বৃদ্ধ বয়সে শোকের পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে।
- দৃষ্টি বাইরের পানে, মস্ত নদীটির ওপারে, জেলার বাইরে- উক্তিটিতে শস্যহীন জনবহুল অঞ্চলের বাসিন্দাদের বেরিয়ে পড়ার ব্যাকুলতা প্রকাশ করা হয়েছে।
- যে সাপ জাগে সেখানে আবার কোমলতার ফুল ফোটে- আওয়ালপুরের পীরের দারস্থ হওয়ায় আমেনা বিবির প্রতি মজিদের প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব ও আমেনা বিবির পা দেখে মজিদের পশুবৃত্তির কোমলতার সংশয়ের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
- শস্যের চেয়ে আগাছা বেশি, ধর্মের চেয়ে টুপি বেশি- উক্তিটিতে বিরান অঞ্চলে জনবহুলতার তুলনায় যৎসামান্য শস্য উৎপাদন এবং ধর্মভীরু লোকের সংখ্যাধিক্য নির্দেশ করেছে।
- মেয়েলোকের মনের মস্করা সহ্য করবে অতটা দুর্বল নয় সমাজ- মহব্বতনগরে সমাজব্যবস্থায় মেয়েরা যে কতটা নিপীড়িত তা বোঝাতে উক্তিটি করা হয়েছে।
- বিশ্বাসের পাথরে যেন খোদাই সে চোখ- প্রাকৃতিক দুর্যোগে দিশেহারা মানুষের কাছে বিশ্বাস ছাড়া আর কিছুই নেই।
- তাগো কথা হুনলে পুরুষ মানুষ আর পুরুষ থাকে না, মেয়েমানুষের অধম হয়- খালেক ব্যাপারির পৌরুষে আঘাত করার জন্য মজিদ উক্তিটি করেছে।
- এমন বেকুবির কথা কেউ কখনো শুনেছ?- মহব্বত নগরে আক্কাস মিয়ার স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষিতে উক্তিটি করা হয়েছে।
- প্রাণের আশ মিটিয়ে বুড়ো তার মেয়েকে মারে কেন?- পুরুষত্বের প্রতি অপমান করায় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে বুড়ো তার মেয়েকে মারে।
- বিচিত্র দুনিয়ায় কাদের কদর বেশি- যারা অন্য দশজনের চেয়ে খোদার মহিমা বেশি জানে ও বুঝে, তাদের কদরও বেশি।
- জমির সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্ক ও ভালোবাসা কেন?- মাটিই কৃষকের প্রাণ, মাটিতেই কৃষক আশ্রিত, তাই উক্তিটি করা হয়েছে।
- সাধারণ লোক যা সচ্ছন্দে করতে পারে সেটা আবার তার দ্বারা সম্ভব নয়- খালেক ব্যাপারি কর্তৃক আওয়ালপুরের পীরকে শয়তান ডেকে ভরদুপুরে সমাজের সামনে পীর সাহেব বলে সম্বোধন করার অপারগতা।
- তুমি এত দয়াল খোদা, তবু তুমি কী কঠিন- খোদার আদেশের কথা বলে মজিদ আমেনা বিবিকে তালাক দিতে বাধ্য করায় রহিমা দুঃখ করে মনে মনে এই উক্তিটি করে।
- জীবনকে সে উপভোগ করেনি। জীবন উপভোগ না করতে পারলে কিসের ছাই মান যশ খ্যাতি- নিঃসন্তান স্ত্রী রহিমার প্রতি অনাগ্রহ ও সন্তানের কামনায় ব্যাকুল হওয়ায় মজিদ সম্পর্কে এই কথা বলা হয়েছে।
- বিচিত্র জীবন্ত সে হাসি, ঝরনার অনাবিল গতির মত ছন্দময় দীর্ঘ সমাপ্তিহীন ধারা- আকাশে শঙ্খচিল ওড়া আর কাকের ডাকাডাকি দেখে জমিলার অট্টহাসি সম্পর্কে উক্তিটি করা হয়েছে।
- ও কি ঘরে বালা আনবার চায় নাকি?- মজিদের রুমের সামনে বিচিত্র ভঙ্গিতে জমিলার উদাসীন অবস্থায় বসে থাকায় মজিদ এই উক্তি করেছে।
- তিনি সব জানেন, সব দেখেন- তথাকথিত মোদাচ্ছের পীরের কবর সম্পর্কে মজিদ এই উক্তি করে।
- ধান দিয়া কী হইব মানুষের জান যদি না থাকে- শিলাবৃষ্টির পরেও রহিমা ধান আনতে যায় না। তার মনে জমিলাকে মাজারে আটকে রাখার কথা মনে হয়। মজিদের কথার প্রত্যুত্তরে রহিমা প্রতিবাদ করে কথাটি বলে।
- নাফরমানি করিও না, খোদার উপর তোয়াক্কল রাখ- প্রবল ঝড়ের ফলে ফসলের প্রচুর ক্ষতি হয়। ফলে গ্রামবাসী মজিদের নিকট হতাশ হয়ে এর প্রতিকার চায়। মজিদ সেই কথার প্রেক্ষিতে উক্তিটি করে।
- আরও পড়ুন : লালসালু উপন্যাসের চরিত্র বিশ্লেষণ
- শীটগুলো সংগ্রহ করতে চাইলে অর্ডার করুন
Thanks sir
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
অনেক কিছু জানতে পারলাম, ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় স্যার ❣️
ধন্যবাদ। অন্যদের সাথে শেয়ারের অনুরোধ রইল।