সিরাজউদ্দৌলা নাটকের গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উক্তি ও চরিত্র থেকে অনুধাবনমূলক প্রশ্ন থাকে। সেগুলো এখানে তুলে ধরা হল।
- দওলত আমার কাছে ভগবানের দাদামশায়ের চেয়েও বড়- উক্তিটিতে উমিচাঁদের অর্থলোভী মনোভাবের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
- নবাব সিরাজউদ্দৌলা নিজেকে শ্রেষ্ঠ বীর বলে আখ্যায়িত করার কারণ- তিনি নবাব আলিবর্দি খাঁর সাথে থেকে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বিজয় অর্জন করায় নিজেকে শ্রেষ্ঠ বীর বলেছেন।
- ক্লাইভ উমিচাঁদকে যুগের সেরা বিশ্বাসঘাতক বলার কারণ- উমিচাঁদ অর্থের মোহে অন্ধ হয়ে যেকোনো দলে যোগ দিতে পারে বলে ক্লাইভ উমিচাঁদকে যুগের সেরা বিশ্বাসঘাতক বলেছে।
- আমরা এমন কিছু করলাম যা ইতিহাস হবে- নবাবের বিরুদ্ধে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে নবাব বিরোধীদের অনুপ্রাণিত করার জন্য ক্লাইভ উক্তিটি করে।
- এখন আপনাকে শক্ত হতে হবে- সিরাজউদ্দৌলাকে বন্দি করে রাজধানীতে আনার ব্যাপারে মির জাফরকে দ্বিধাগ্রস্ত দেখে ক্লাইভ উক্তিটি করে।
- আরে বাপরে, একেবারে কাল কেউটে- উমিচাঁদের অর্থলোভে তাজ্জব হয়ে মির জাফর উক্তিটি করেছে।
- আজ নবাবকে ডোবাচ্ছেন, কাল আমাদের পথে বসাবেন না তা কি বিশ্বাস করা যায়- উক্তিটি দ্বারা ক্লাইভ মির জাফর ও তার সহযোগীদের বিশ্বাসঘাতকতামূলক স্বভাবকে বুঝিয়েছে।
- কেউ নেই, কেউ আমার সঙ্গে দাঁড়াল না লুৎফা- আপদকালে বিপন্ন ও পরাজিত নবাবের কাছে কেউ না দাঁড়ালে হঠাৎ প্রকাশ্য দরবারে লুৎফা আসে। তখন নবাব হতাশ, বিহ্বল ও নিঃসঙ্গ অবস্থায় উক্তিটি করেছেন।
- সিরাজউদ্দৌলাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারলে ঘসেটি বেগম খুশি হবেন কেন- প্রতিহিংসার কারণে ঘসেটি বেগম সিরাজের ক্ষমতাচ্যূতি ঘটলে খুশি হবেন।
- তুমিও আমার বিচার করতে বসলে- নানা ষড়যন্ত্রে শিকার সিরাজউদ্দৌলা যখন তাঁর বিশ্বাসের শেষ আশ্রয় সহধর্মিনী লুৎফার কাছে আসে তখন স্ত্রীর অনুযোগের উত্তর দিতে গিয়ে বিপর্যস্ত নবাব উক্তিটি করেছেন।
- ফরাসি সেনাপতি সাঁফ্রে নবাবের পক্ষ হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার কারণ- প্রতিপক্ষ ইংরেজদের ঘায়েল করে ব্যবসা জগতে তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য ফরাসি সেনাপতি সাঁফ্রে নবাবের পক্ষ হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন।
- নবাবের প্রতি ক্লাইভের ভয় না থাকার কারণ- ক্লাইভ জানে যে নবাবের পরিষদবর্গের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে নবাব শক্তিশূন্য ও নিঃস্ব, তাই ক্লাইভ নবাবকে ভয় পায় না।
- মির জাফর ক্লাইভের হাত ধরে বাংলার মসনদে বসেছিল- ক্লাইভের প্রতি আনুগত্য দেখাতে মির জাফর তার হাত ধরে বাংলার মসনদে বসেছিল।
- ইনি কি নবাব না ফকির- ক্লাইভ দরবারে প্রবেশ করে নতুন নবাব মির জাফরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বিস্মিত হয় এবং ব্যঙ্গ করে উক্তিটি করে।
- আমাদের মাঝখানে একটি রাজত্বের দেয়াল। মাঝে মাঝে ভেবেছি, এই বাধা যদি দূর হয়ে যেত- উক্তিটি দ্বারা রাজত্ব পরিচালনায় সিরাজের চরম প্রতিকূলতা ও লুৎফার প্রতি নবাবের তীব্র ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।
- মিরন সিরাজকে মোহাম্মদি বেগকে দিয়ে হত্যা করানোর কারণ- মিরন সিরাজের পত্নী লুৎফুন্নিসাকে পাওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে মোহাম্মদি বেগকে দিয়ে সিরাজকে হত্যা করায়।
- কিন্তু আমার বিশ্বাস করতে প্রবৃত্তি হয় না যে, ওরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়বে- মির জাফর ও তার সহযোগিদের উপর অবিশ্বাস স্বরূপ সিরাজ উক্তিটি করেছেন।
- ওরা বেনিয়ার জাত। পয়সা ছাড়া কিছু বোঝে না- ইংরেজদের স্বার্থান্বেষী বৈশিষ্ট্যের প্রতি ইঙ্গিত করে রাজবল্লভ মির জাফরের কাছে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।
- লোকবল বাড়ুক আর না বাড়ুক, আহার্যের অংশীদার বাড়ল তা অবশ্য ঠিক- নবাব কর্তৃক তাড়া খেয়ে ভাগীরথী নদীর উপর ভাসমান জাহাজে বসে নিজেদেরে চরম দুরবস্থা প্রসঙ্গে মার্টিন ও ড্রেককে উদ্দেশ্য করে হ্যারি উক্তিটি করেছে।
- আগ্নেয়াগিরির মতো প্রচণ্ড গর্জন ফেটে পড়বার জন্য তৈরি হচ্ছি- নবাবের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মির জাফর আলোচ্য উক্তিটি করেছে।
- বাংলার বুকে দাঁড়িয়ে বাঙালির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবার স্পর্ধা ইংরেজ পেল কোথা থেকে? আমি তার কৈফিয়ত চাই- উক্তিটি দ্বারা সিরাজউদ্দৌলার দেশপ্রেম ও তাঁর বিরুদ্ধে ইংরেজদের ষড়যন্ত্রের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
- রাইসুল জুহালা শিল্পীর ছদ্মবেশে ঘসেটি বেগমের বাড়ি উপস্থিত হয়েছিল- রাইসুল জুহালা সংবাদ সংগ্রহের জন্য শিল্পীর ছদ্মবেশ ধরে ঘসেটি বেগমের বাড়িতে গিয়েছিলেন।
- কোম্পানির প্রতিনিধি ওয়াটসকে সিরাজ অভিযুক্ত করার কারণ- সিরাজ কোম্পানির প্রতিনিধি ওয়াটসকে প্রজাদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ ও দরবারে গুপ্তচরবৃত্তির কারণে অভিযুক্ত করে।
- আশা করি নবাব আমাদের উপর জুলুম করবেন না- নবাব হলওয়েলকে তার কৃতকর্মের উপযুক্ত প্রতিফল দেওয়ার জন্য তৈরি হতে বললে কাতর স্বরে হলওয়েল উক্তিটি করে।
- গুপ্তচরের কাজ করেছি দেশের স্বাধীনতার খাতিরে- দেশপ্রেমিক রাইসুল জুহালার কাছে জীবনের চেয়ে দেশ বড়, তাই দেশের স্বাধীনতা রক্ষার্থে মৃত্যুর সময় উক্ত মন্তব্যটি করেছেন।
- সিরাজ আমার কেউ নয়- লুৎফুন্নিসার কক্ষে নবাবের খালা ঘসেটি বেগ প্রচণ্ড আক্রোশ, বিদ্বেষ ও প্রতিশোধপরায়ন হয়ে সিরাজের মা ও স্ত্রীর সামনে উক্তিটি করেছেন।
- আমার শেষ যুদ্ধ পলাশীতেই- নবাবের বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহনলাল নবাবের উদ্দেশ্য উক্তিটি করেছেন।
- মুর্শিদাবাদের ভীতসন্ত্রস্ত নাগরিকরা পালানোর কারণ- পলাশীতে নবাবের পরাজয়ের সংবাদ ও পরবর্তীয় সময়ে মোহনলালে ধরা পড়ার সংবাদ রাজধানীতে পৌঁছে যাওয়ার সাথে সাথেই মুর্শিদাবাদের নাগরিকরা ভয়ে পালাতে শুরু করে।
- আরও পড়ুন : সিরাজ পতনের কারণ ও ঐতিহাসিক বিতর্ক
- শীটগুলো সংগ্রহ করতে চাইলে অর্ডার করুন