ছবি
(বিদেশিদের) আপনাদের সবার জন্যে এই উদার আমন্ত্রণ (অতিথিপরায়ণ মনোভাব)
ছবির মতো এই দেশে (বাংলাদেশ) একবার বেড়িয়ে যান। (বাংলাদেশ মহান শিল্পীর হাতে আঁকা এক ছবি)
অবশ্য উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো মনোহারী স্পট (চিত্তাকর্ষক স্থান) আমাদের নেই,
কিন্তু তাতে কিছু আসে যায় না- আপনার স্ফীত সঞ্চয় (সঞ্চিত অর্থ) থেকে
উপচে পড়া ডলার মার্ক (সোনা-রূপার ওজন) কিংবা স্টার্লিংয়ের (ব্রিটেনের মুদ্রা) বিনিময়ে যা পাবেন
ডাল্লাস (টেক্সাসের নগর) অথবা মেম্ফিস (মিসিসিপি নদীর তীরে) অথবা কালিফোর্নিয়া তার তুলনায় শিশুতোষ! (আমেরিকার ঐতিহ্যবাহী স্থানের চেয়ে মাতৃভূমি শ্রেষ্ঠ)
আসুন, ছবির মতো এই দেশে বেড়িয়ে যান
রঙের এমন ব্যবহার, বিষয়ের এমন তীব্রতা (মুক্তিযুদ্ধে প্রাণদানকারী মানুষের রক্তের রং)
আপনি কোনো শিল্পীর কাজে পাবেন না, বস্তুত শিল্প মানেই নকল নয় কি? (অ্যারিস্টটলের মতে শিল্প-সাহিত্য বাস্তব ঘটনার অনুকরণ)
অথচ দেখুন, এই বিশাল ছবির জন্যে ব্যবহৃত সব উপকরণ অকৃত্রিম; (বাংলাদেশ গঠনে সবগুলো উপাদানই অকৃত্রিম)
আপনাকে আরো খুলে বলি: এটা, অর্থাৎ আমাদের এই দেশ,
এবং আমি যার পর্যটন দপ্তরের অন্যতম প্রধান, আপনাদের খুলেই বলি,
সম্পূর্ণ নতুন একটি ছবির মতো করে
সম্প্রতি সাজানো হয়েছে। (মুক্তিযুদ্ধের পরের দেশগঠন)
(খাঁটি বাঙালির চেতনা) খাঁটি আর্যবংশদ্ভূত (আর্য থেকে উৎপন্ন) শিল্পীর কঠোর তত্ত্বাবধানে ত্রিশ লক্ষ কারিগর
দীর্ঘ নটি মাস দিনরাত পরিশ্রম করে বানিয়েছেন এই ছবি।
এখনো অনেক জায়গায় রং কাঁচা- কিন্তু কী আশ্চর্য গাঢ় দেখেছেন? (শহিদের আত্মত্যাগের স্মৃতি এখনো তাজা)
ভ্যান গগ্ (ডাচ চিত্রশিল্পী) যিনি আকাশ থেকে নীল আর শস্য থেকে
সোনালি তুলে এনে
ব্যবহার করতেন- কখনো, শপথ করে বলতে পারি,
এমন গাঢ়তা দেখেন নি! (শহিদের রক্তে সৃষ্ট এমন শিল্প ভ্যানগগ কখনো দেখেনি)
আর দেখুন, এই যে নরমুণ্ডের (শহিদদের খুলি) ক্রমাগত ব্যবহার- ওর ভেতরেও
একটা গভীর সাজেশান (নতুন কিছুর উন্মেষ) আছে- আসলে ওটাই এই ছবির- অর্থাৎ
এই ছবির মতো দেশের- থিম্! (ছবির মৌলিক ও বিশ্বজনীন মূল্য প্রতিভাত হয়)
- কবিতাটি আপন যৌবন বৈরী কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে। এটি গদ্যছন্দে রচিত।
- আরও পড়ুন- তাহারেই পড়ে মনে কবিতার ব্যাখ্যা