Skip to content

বাংলা ব্যাকরণ প্রশ্ন বিশ্লেষণ- সপ্তম পর্ব

বাংলা প্রশ্নগুলো কীভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে?

প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে পড়লে সবকিছু সহজে বুঝা যায়। পরীক্ষার জন্য এভাবে বিস্তারিত পড়া উচিত। এতে প্রতিটি টপিক বুঝে আসে।

১. বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ রচনা করেন কে?
ক. অক্ষয় দত্ত                      খ. মার্শম্যান
গ. ব্র্যাসি হ্যালহেড               ঘ. রামমোহন রায়

ব্যাখ্যা :
ক. অক্ষয়কুমার দত্ত বাংলা গদ্যের মননশীল ও পরিমার্জিত রূপ প্রদানকারী লেখক ও তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদক।
খ. শ্রীরামপুর মিশন থেকে প্রকাশিত ‘সমাচার দর্পণ’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন জন ক্লার্ক মার্শম্যান।

গ. বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ গ্রন্থ রচনা করেন ব্র্যসি হ্যালহেড। গ্রন্থটি প্রধানত ইংরেজি অংশত বাংলায় রচিত।
ঘ. ১৮২৬ সালে রামমোহন রায় ইংরেজিতে বাংলা ব্যাকরণ লিখেন। এরপর তিনি স্কুল বুক সোসাইটির জন্য ঐ গ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ করে দেন যা ১৮৩৩ সালে গৌড়ীয় ব্যাকরণ নামে প্রকাশিত হয়। সুতরাং সঠিক উত্তর ()।

২. নিচের কোন শব্দটি প্রত্যয়ের নিয়মে গঠিত?
ক. শরদিন্দু                         খ. সদ্ব্যবহার
গ. শারদীয়                          ঘ. বিদ্যালয়

ব্যাখ্যা : সাধারণত অর্থবোধক শব্দের সাথে অর্থহীন শব্দাংশ যুক্ত হয়ে প্রত্যয়ান্ত শব্দ গঠিত হয়। সুতরাং এই প্রশ্নের অপশনে শব্দের শেষে যদি অর্থহীন শব্দাংশ পাওয়া যায় বা আদিস্বরের পরিবর্তন হয় তবে তাই প্রত্যয়।
শরৎ (মাস)+ ইন্দু (নক্ষত্র) = শরদিন্দু।
সৎ+ ব্যবহার = সদ্ব্যবহার।
শরৎ+ ঈয় = শারদীয়।
বিদ্যা+ আলয় (ঘর) = বিদ্যালয়।

সুতরাং অপশনগুলোতে দেখা যাচ্ছে শারদীয় শব্দের পরের অংশের অর্থ নেই এবং আদিস্বরের পরিবর্তন হয়েছে তাই এটিই প্রত্যয় সাধিত শব্দ। সুতরাং সঠিক উত্তর ()।

৩. নিচের কোন শব্দে ‘শ’ ধ্বনির প্রকৃত উচ্চারণ বহাল আছে?
ক. শৃঙ্খল                            খ. শুধু
গ. প্রশ্ন                                ঘ. শ্রমিক

ব্যাখ্যা : উচ্চারণ ও বানান সর্বদা একরকম হয় না। ‘শ’ এর প্রকৃত উচ্চারণ Sh এর মতো। ‘স’ এর প্রকৃত উচ্চারণ S এর মতো। অপশনে বর্ণিত শৃঙ্খল, প্রশ্ন ও শ্রমিক উচ্চারণে ‘শ’ ব্যবহৃত হলেও উচ্চারণ হয়েছে ‘স’ (S) এর মতো। কেবল ‘শুধু’ শব্দে ‘শ’ এর প্রকৃত উচ্চারণ Sh বহাল আছে। তাই সঠিক উত্তর ()।

৪. পাগলা ঘোড়া ক্ষেপেছে, চাবুক ছুড়ে মেরেছে- ‘চাবুক’ কোন কারক?
ক. করণ                            খ. কর্ম
গ. কর্তৃ                               ঘ. অধিকরণ

ব্যাখ্যা : স্বাভাবিক অর্থ অনুসারে অনেকেই এটি করণ কারক উত্তর করবে। কারণ চাবুক মারা অর্থ চাবুক দিয়ে মারা। কিন্তু প্রশ্নে ‘চাবুক মারা’ চাওয়া হয় নি। বলা হয়েছে ‘চাবুক ছুড়ে মারা’। সুতরাং এই দিক থেকে চাবুক ছুড়া ‘কর্মকারক’ উত্তর হবে। আমরা যেমন বলি- আমি টিকিট প্লাটফর্মে ছুড়ে মারলাম। সুতরাং সঠিক উত্তর ()।

৫. বিমান হতে ত্রাণ ফেলা হয়েছিল- ‘ত্রাণ’ পদটি কোন কারকে কোন বিভক্তি?
ক. অপাদানে ৫মী                          খ. কর্মে শূন্য
গ. সম্প্রদানে শূন্য                           ঘ. অধিকরণে শূন্য

ব্যাখ্যা : ত্রাণ বা সাহায্য চিরতরে দেওয়া হয় তাই এটি অনেকেই সম্প্রদান কারক উত্তর দিবে। কিন্তু সম্প্রদান কারকে ‘যা দেয়, তা সম্প্রদান নয়’। বরং যাকে দেওয়া হয়, তা-ই সম্প্রদান। যেমন- রফিক ভিক্ষুককে টাকা দিল। এখানে ‘টাকা’ সম্প্রদান নয়, বরং ‘ভিক্ষুককে’ সম্প্রদান। ‘টাকা’ কর্মকারক।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রশ্নোল্লিখিত বাক্যে ‘বিমান হতে ত্রাণ ফেলা হয়েছিল’ কিন্তু কার জন্য এই ত্রাণ, তা বলা হয় নি। তাই ‘ত্রাণ’ এখানে কর্মকারক। সুতরাং সঠিক উত্তর ()।

৬. বনের বাঘে নয়, মনের বাঘে খায়- ‘মনের বাঘে’ শব্দটি কোন কারক?
ক. কর্তৃকারক                       খ. অপাদান
গ. কর্ম                                  ঘ. অধিকরণ

ব্যাখ্যা : ভয়, ডর ইত্যাদি বোঝালে অপাদান কারক হয়। সেই হিসেবে ‘মনের বাঘের’ নিহিতার্থ ভয়, সেই হিসেবে আমরা অনেকেই অপাদান কারক উত্তর দিব। কিন্তু উত্তর ঠিক হবে না।
কারণ,‘নিহিতার্থ’ কারকের আলোচ্য বিষয় নয়। যেমন- কোনো বিদেশিকে বলা হল, রফিক পটোল তুলেছে। এখন ‘পটোল তোলা’ এর বাগধারার অর্থ ‘মারা যাওয়া’। অথচ সেই বিদেশি এটি শুনলে বুঝবে ‘পটোল তুলতে ক্ষেতে গেছে’। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে নিহিতার্থ কারকের আলোচ্য বিষয় না। এই হিসেবে সঠিক উত্তর ()। এখানে খাওয়া ক্রিয়া ‘মনের বাঘ’ দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে।

৭. কোনটি মৌলিক বিশেষণ?
ক. গুণী                           খ. ফুটন্ত
গ. সুপ্ত                            ঘ. কালো

ব্যাখ্যা : আমরা জানি যে পদ বিশেষ্য বা সর্বনামের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ সাধন করে তাকে ‘বিশেষণ’ বলে। যেমন- ফুটন্ত গোলাপ, গুণী লোক, সুপ্ত প্রতিভা, কালো কাপড়।
প্রশ্নে মৌলিক শব্দযোগে বিশেষণ চাওয়া হয়েছে। আমরা জানি যে শব্দকে ভাঙলে প্রাসঙ্গিক অর্থ পাওয়া যায় না তাকে ‘মৌলিক শব্দ’ বলে। সুতরাং অপশনে বর্ণিত শব্দগুলো ভাঙলে আমরা পাই গুণ+ ইন = গুণী, ফুট+ অন্ত = ফুটন্ত, √স্বপ+ ত = সুপ্ত। ‘কালো’ একটি মৌলিক শব্দ। সুতরাং সঠিক উত্তর ()।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page