ঋতু বর্ণন
প্রথমে বসন্ত ঋতু নবীন পল্লব (নতুন পাতার আগমন)। (প্রকৃতিতে সজীবতার বার্তা)
দুই পক্ষ (শীত ও গ্রীষ্মকাল) আগে পাছে মধ্যে সুমাধব (বসন্ত)৷৷ (প্রকৃতি সুমধুর করে তোলে)
মলয়া সমীর (দখিনা বাতাস) হৈলা (হলো) কামের পদাতি (প্রেমের দূত)।
(মানুষের মনে প্রেমের আবেশ বাড়িয়ে তুলে)
মুকুলিত কৈল (করল) তবে বৃক্ষ বনস্পতি৷৷
কুসুমিত (ফুলে ভরে গেছে) কিংশুক (পলাশ ফুল) সঘন (ঘন হয়ে) বন লাল৷ (মুনোমুগ্ধকর পরিবেশ)
পুষ্পিত সুরঙ্গ (শোভনীয়) মল্লি (বেলিফুল) লবঙ্গ গুলাল (আবির- গুড়ো মেশানো রঙ)৷৷
(বেলি ফুল, লবঙ্গ ও রঙিন আবিরের সাজে প্রকৃতি নতুন রূপে সাজে)
ভ্রমরের ঝঙ্কার (গুঞ্জন) কোকিল কলরব।
শুনিতে যুবক মনে জাগে অনুভব৷৷ (প্রেমময় পরিবেশ)
নানা পুষ্প মালা গলে বড় হরষিত।
বিচিত্র বসন অঙ্গে চন্দন চৰ্চিত৷৷ (সাজগোছের উৎসব)
নিদাঘ (গ্রীষ্মকাল) সমএ (সময়) অতি প্রচণ্ড তপন (সূর্য)।
(চারপাশে অসহনীয় উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে)
রৌদ্র ত্রাসে (রোদের ভয়ে) রহে ছায়া চরণে সরণ (আশ্রয়)॥
(রোদের তীব্রতার ভয়ে মানুষ ছায়ায় আশ্রয় খোঁজে)
চন্দন চম্পক (চাঁপা ফুল) মাল্য মলয়া পবন (দখিনা বাতাস)।
(চন্দনের সুগন্ধি, চাঁপা ফুলের মালা ও দখিনা বাতাস মনে কিছুটা প্রশান্তি আনে)
সতত দম্পতি সঙ্গে ব্যাপিত মদন (কামদেব)৷৷ (প্রকৃতির উত্তাপ প্রেমের উষ্ণতা বাড়িয়ে দেয়)
পাবন (প্লাবন) সময় (বর্ষা ঋতু) ঘন ঘন গরজিত।
নির্ভয়ে বরিষে জল চৌদিকে (চারিদিকে) পূরিত (পরিপূর্ণ)৷৷
(বর্ষাকালে ঘন ঘন গর্জন শোনা যায় ও চারিদিতে পানিতে ভরে যায়)
ঘোর শব্দে কৈলাসে (হিমালয়ের একটি চূড়া) মল্লার রাগ (বর্ষা ঋতুর রাগ বিশেষ) গাএ ।
(বৃষ্টির ধারা যেন মেগমল্লার রাগের মতো যা কৈলাসে থেকে তিনি শুনতে পাচ্ছেন- চারদিকে সুনসান নীরবতার কারণে বৃষ্টির শব্দকে মনে হয় যেন হিমালয় পর্বতে গাওয়া মালহার)
দাদুরী (স্ত্রী ব্যাঙ) শিখীনি (ময়ূরী) রব অতি মন ভাএ (ভাব জাগায়)॥ (বর্ষার উচ্ছ্বাস প্রকাশ)
কীটকুল রব পুনি ঝঙ্কারে ঝঙ্কারে । (কীটপতঙ্গেরা বারবার ঝংকার তুলে সুর করে)
শুনিতে যুবক চিত্ত হরষিত ডরে ৷ (প্রকৃতির সুর মনে আবেগ ও রহস্য তৈরি করে)
আইল শারদ ঋতু নির্মল আকাশে । (নির্মেঘ আকাশ)
দোলাএ চামর কেশ (গরুর পুচ্ছ/কাশফুল) কুসুম বিকাশে ৷
(শরতের হালকা বাতাসে ফুল প্রকৃতি গরুর লেজের মতো দুলছে)
নবীন খঞ্জন (এক জাতীয় পাখি) দেখি বড়হি কৌতুক। (পাখির চঞ্চলতা মনে ভালো লাগে)
উপজিত (উৎপন্ন) যামিনী (রাত্র) দম্পতি মনে সুখ ৷ (রাত্র যেন দম্পতির মনে সুখ এনে দেয়)
প্রবেশে হেমন্ত ঋতু শীত অতি যায়। (শীত পড়া শুরু করে)
পুষ্প তুল্য তাম্বুল (পান) অধিক সুখ হয় ৷৷ (পানের লতা দেখতে ও খেতে ভালো লাগে)
শীতের তরাসে (ভয়ে) রবি (সূর্য) তুরিতে (দ্রুত) লুকাএ। (দিন ছোট হয়ে যায়)
অতি দীর্ঘ সুখ নিশি পলকে পোহাএ॥ (দীর্ঘ রাতের আরামদায়ক সুখ দ্রুতই শেষ হয়ে যায়)
পুষ্প শয্যা ভেদ ভুলি বিচিত্র বসন । (ফুলের মতো আরামদায় বিছানা ছেড়ে অন্যান্য পোশাক পরতে ইচ্ছে করে না)
উরে উরে (ওরে ওরে- উৎসবমুখর পরিবেশ) এক হৈলে শীত নিবারণ ৷৷ (সবাই এক হয়ে শীত নিবারণে নেমে পড়ে)
কাফুর (কর্পুর-সুগন্ধী) কস্তুরী (হরিণের নাভি থেকে তৈরি সৌরভ) চুয়া (সুগন্ধি) যাবক (আলতা) সৌরভ। (চারিদিকে সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়ে)
দম্পতির চিত্তেত চেতন অনুভব৷৷ (দম্পতির মনে ভালোবাসা তৈরি হয়)